চরফ্যাশনে মাদরাসার খেলার মাঠে চাষ দিয়ে আলু আবাদের প্রস্তুতি!

চরফ্যাশনে মাদরাসার খেলার মাঠে চাষ দিয়ে আলু আবাদের প্রস্তুতি!
চরফ্যাশনের ওসমানগঞ্জ ইসলামিয়া দাখিল মাদরাসার মাঠে ট্রাক্টর দিয়ে চাষ দিয়ে রেখেছেন সুপার। ছবি: লালমোহন নিউজ

হাসান লিটন, প্রতিনিধি, চরফ্যাশন (ভোলা): ভোলার চরফ্যাশন উপজেলার একটি মাদরাসার মাঠে আলু আবাদের জন্য চাষ দিয়েছেন একই মাদরাসার সুপার। উপজেলার ওসমানগঞ্জ ইসলামিয়া দাখিল মাদরাসার সুপার মাওলানা আব্দুল বাতেনের বিরুদ্ধে এমন অভিযোগ করেছেন স্থানীয় শিক্ষার্থীসহ এলাকাবাসীরা। তাদের অভিযোগ; তিনি মাঠে আলু চাষাবাদ করার জন্য ট্রাক্টর দিয়ে চাষ দিয়েছেন। সুপারের এরকম কাণ্ডে এলাকায় তোলপাড় সৃষ্টি হয়েছে। এ ব্যাপারে স্থানীয়রা ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। তবে মাদরাসার সুপারের দাবি মাঠে খেলা বন্ধ করার জন্য তার এই পদক্ষেপ।

জানা যায়, প্রত্যন্ত এলাকায় শিক্ষার আলো ছড়াতে চরফ্যাশনের ওসমানগঞ্জ ইসলামিয়া দাখিল মাদরাসাটি ১৯৮৩ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়। প্রতিষ্ঠাতা মরহুম আব্দুল লতিফ মিয়া ওই প্রতিষ্ঠানটির ভবন নির্মাণ ও খেলার মাঠের জন্য ১ একর জমি দান করেন। যেন এলাকার শিক্ষার্থীরা সুশিক্ষায় প্রতিষ্ঠিত হতে পারেন। ওসমানগঞ্জ ইসলামিয়া দাখিল মাদরাসাটি ১৯৮৬ সালে এমপিওভুক্ত হয়েছে।

স্থানীয়দের অভিযোগ, ওসমানগঞ্জ ইসলামিয়া দাখিল মাদরাসার সুপার আব্দুল বাতেন খেলার মাঠ নিয়ে ব্যবসা করছেন। এই মাঠে বর্ষার  মৌসুমে ধান চাষ করা হয়। এখন আবার আলু চাষ করার জন্য ট্রাক্টর দিয়ে মাঠে চাষ দেওয়া হয়েছে। উনি খুবই চতুর মানুষ, যেই সরকারই ক্ষমতায় আসে ওই সরকারেরই চাটুকারিতা করে বেড়ান সুপারা আব্দুল বাতেন।

স্থানীয় শিক্ষার্থী মিরাজ ও শান্ত জানান, এলাকার স্কুল, মাদরাসা ও কলেজে পড়ুয়ারা অবসর সময়ে এই মাঠে খেলাধুলা করে। কারণ নিয়মিত খেলাধুলা করলে শরীর-মন ভালো থাকে। এছাড়া খেলাধুলা পড়ালেখারও একটি অংশ। শিক্ষার্থীরা খেলতে না পারলে তারা ডিজিটাল গেমস্ এবং জুয়ায় আসক্ত হতে পারেন। এতে সমাজের কিশোর, তরুণ এবং যুবকরা বিপদগামী হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।

তাই আমরা ওসমানগঞ্জ ইসলামিয়া দাখিল মাদরাসার খেলার মাঠটি পূণরায় শিক্ষার্থীদের খেলার উপযোগী করে তোলার দাবি জানাচ্ছি। একইসঙ্গে কেনো  মাদরাসার সুপার মাওলানা আব্দুল বাতেন এমন কাণ্ড করেছেন, তার জন্য সুপারের বিরুদ্ধে প্রশাসনের কাছে অনুরোধ থাকবে প্রয়োজনীয় আইনি ব্যবস্থা গ্রহণের।  

অভিযোগের ব্যাপারে ওসমানগঞ্জ ইসলামিয়া দাখিল মাদরাসার সুপার মাওলানা আব্দুল বাতেন বলেন, শিক্ষার্থীরা যাতে মাঠে খেলাধুলা না করতে পারে তার জন্য ট্রাক্টর দিয়ে মাঠে চাষ দিয়েছে। তবে আলু আবাদ করতে চাষ দেওয়া হয়নি। এছাড়া শিক্ষার্থীরা মাঠে খেলাধুলা করতে না পারলে মাঠ কেনো রাখা হয়েছে, এমন প্রশ্ন করলে এর সদোত্তর দিতে পারেননি মাদরাসা সুপার মাওলানা আব্দুল বাতেন।

চরফ্যাশন উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. মহিউদ্দিন জানান, মাদরাসা সুপার কোনোভাবেই প্রতিষ্ঠানের মাঠে চাষ দিতে পারেন না। আমি বিষয়টি খতিয়ে দেখবো।

এ বিষয়ে চরফ্যাশন উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মোহাম্মদ আবুল হাছনাত বলেন, বিষয়টি আমার জানা নেই। তবে মাদরাসার মাঠে সুপারের চাষের ব্যাপারে কেউ অভিযোগ করলে বিস্তারিত জেনে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

লালমোহননিউজ/ -এইচপি