চরফ্যাশনে বৃষ্টিতে জনজীবন বিপর্যস্ত

চরফ্যাশনে বৃষ্টিতে জনজীবন বিপর্যস্ত
ছবি: লালমোহন নিউজ
হাসান লিটন, চরফ্যাশন(ভোলা) প্রতিনিধি: টানা বর্ষণে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে চরফ্যাশন উপজেলা জনজীবন। বৃষ্টির কারণে গৃহবন্দি হয়ে পড়েছেন মানুষ। গত ৪৮ ঘণ্টার বৃষ্টিতে মানুষের স্বাভাবিক জীবনযাত্রায় প্রভাব পড়েছে।
প্রায় সব মানুষের দৈনেন্দিন কাজের বিঘ্ন ঘটছে। তবে বেশি দুর্ভোগে পড়েছেন খেটে খাওয়া মানুষ। ভারি বর্ষণে রাস্তাঘাট এমনকি নিচু এলাকার বাড়িঘর পানিতে তলিয়ে স্বাভাবিক জীবনযাত্রা থমকে আছে।মৌসুমি বায়ুর প্রভাবে বৃষ্টিপাতের পারিমাণ বেড়ে গেছে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অফিস। 
জেলা আবহাওয়া অফিস সূত্র জানা যায়, আগামী ৩ দিন ধরে অস্থায়ীভাবে দমকা হাওয়া বজ্রপাত সহ জেলার কোথাও কোথাও মাঝারি ধরনের ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টিপাতের প্রবণতা অব্যাহত থাকতে পারে।
এদিকে গত বৃহস্পতিবার (৩ আগষ্ট) ভোররাত থেকে উপজেলা জুড়ে গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি শুরু হয়। এরপর থেকে ক্রমেই বাড়ছে বৃষ্টি ও বাতাসের বেগ। সাথে সাথে নদ-নদীর পানিও বৃদ্ধি পেয়ে নির্মাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। এতে দুর্ভোগে পড়েছেন খেটে খাওযা সাধারণ মানুষ। টানা কয়েকদিনের বৃষ্টির তীব্রতার কারণে সকল ধরনের কাজকর্ম থেমে গেছে। ব্যাহত হচ্ছে স্বাভাবিক জীবনযাত্রা।
শনিবার (৫ আগস্ট) সকাল থেকেই বৃষ্টির কারণে উপজেলার রাস্তাঘাট ফাঁকা। খুব কমসংখ্যক যানবাহন চলাচল করতে দেখা গেছে। বৃষ্টির পানিতে নিমজ্জিত হয়েছে উপজেলার ২১ টি ইউনিয়ন। 
অন্যদিকে পূর্নিমার অস্বাভাবিক জোয়ারের পানিতে তলিয়ে গেছে ঢালচর, চরকুকরি মুকরি, ও মুজিব নগর ইউনিয়ন সহ উপজেলার বেশ কিছু নিচু এলাকা।
 এদিকে বৃষ্টির কারণে গ্রামাঞ্চলের রাস্তা-ঘাট পানিতে তলিয়ে  কদমাক্ত হয়ে পড়েছে রাস্তাঘাট। ক্ষেত খামারে পানি জমে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে। এতে আউশের জন্য কিছুটা উপকারী হলেও সবজি এবং আমনের বীজতলা ও মাছের ঘের ক্ষতির আশঙ্কা করা হচ্ছে। ফলে চিন্তিত হয়ে পড়েছেন চাষিরা।
এছাড়াও নদীর পানি বেড়ে যাওয়ায় বেতুয়া , কলমী,বক্কসী ও লঞ্চঘাট তলিয়ে গেছে। এতে দুর্ভোগে পড়েছেন যাত্রীরা। বৃষ্টি উপেক্ষা করেই জেলেদের মাছ শিকার করতে দেখা গেছে। কারণ বৃষ্টি বাড়লে মাছের পরিমাণ বেড়ে যায় বলে মনে করেন জেলেরা। এ জন্য জাল, ট্রলার ও নৌকাসহ ইলিশ ধরার সরঞ্জাম নিয়ে নদীতে ছুটছেন তারা।
উপজেলার দক্ষিণ আইচার রাজমিস্ত্রী জাকির জানান, কাজের জন্য ভোরে বাড়ি থেকে বের হয়ে বাজারের একটি চায়ের দোকানে আটকে আছেন। বৃষ্টির কারণে আর কাজে যাওয়া হয়নি। দিন হাজিরা হিসেবে তিনি ১ হাজার টাকা করে আয় করেন। এভাবে বসে থাকা মানেই ক্ষতি।
অটোরিকশাচালক নূরমোহাম্মদ বলেন, সকাল থেকে ভারী বৃষ্টি হওয়ার কারণে লোকজন ঘরের বাইরে আসেনি, তাই রিকশায় বসে অলস থাকা ছাড়া কোনো কাজ নেই।
উপজেলা পত্রিকার হকার মো.কবির হোসেন জানান, বেলা একটার দিকে পলিথিন মুড়িয়ে পত্রিকা নিয়ে বের হয়েও ভারী বৃষ্টির কারণে বিকাল ৪ টা পর্যন্ত এখনও সব পত্রিকা বিলি করতে পারেননি তিনি।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো ওমর ফারুক বলেন, বৃষ্টির কারণে উপজেলার নির্মাঞ্চলের কিছু আউশ ধানের জমি তলিয়ে গেছে। তবে বৃষ্টি বন্ধ হলে এসব পানি নেমে যাবে। এছাড়া উপজেলার কোথাও কোনো ফসলি জমির ক্ষয়ক্ষতি হয়নি।
লালমোহননিউজ/ -এইচপি