বান্ধবীকে নিয়ে রাতভর ইয়াবা সেবনের পর ভোরে হত্যা

বান্ধবীকে নিয়ে রাতভর ইয়াবা সেবনের পর ভোরে হত্যা

রোমানের সঙ্গে নাসরিনের বন্ধুত্ব হয়। গত ৬ অক্টোবর রাতে বন্ধুর ফাঁকা বাড়িতে বান্ধবী নাসরিনকে নিয়ে যান রোমান। সঙ্গে ছিল রোমানের আরো ৩-৪ বন্ধু। রাতভর সেখানেই চলে ইয়াবার আড্ডা। এরপর নারসিনকে হত্যা করে ঘরের ধর্নার সঙ্গে ঝুলিয়ে রাখা হয়। ভোরে সেখান থেকে দুই বন্ধু মোটরসাইকেলের মাঝখানে মৃত নাসরিনকে বসিয়ে নিয়ে যান সিরাজগঞ্জ বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন নেছা জেনারেল হাসপাতাল মর্গে। পরে মর্গের সামনে মরদেহ ফেলে রাখেন রোমান। এরপর বান্ধুবী নাসরিনের বাবাকে মোবাইলে মেয়ের মৃত্যুর সংবাদ জানিয়ে পালিয়ে যান রোমান। এ ঘটনার আশ্রয়দাতা আকাশ গ্রেফতার করেছে পুলিশ। 
বুধবার সন্ধ্যায় মামলার তদন্ত কর্মকর্তা এস আই আব্দুর রাজ্জাক জানান, হত্যাকাণ্ডে জড়িতদের মধ্যে আকাশ নামে একজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। বাকিদের গ্রেফতারে কাজ করছে পুলিশ। 

এর আগে, গত ৬ অক্টোবর রাতে সদর উপজেলার সয়দাবাদ পুনর্বাসন এলাকায় সেলিম সেখ ওরফে পটল জামাইয়ের বাড়িতে এ ঘটনা ঘটে। হত্যাকাণ্ডের শিকার সুমাইয়া খাতুন ওরফে নাসরিন শহরের মাছুমপুর মধ্যপশ্চিমপাড়ার বাসিন্দা বাস শ্রমিক নাসির উদ্দিনের মেয়ে।

পুলিশ ও মামলা সূত্রে জানা যায়, স্বামীর সংসার ভেঙে যাওয়ায় ৩ বছর বয়সী ছেলেকে নিয়ে নাসরিন দুই বছর যাবৎ তার বাবার বাড়িতেই থাকতেন। এ অবস্থায় সয়দাবাদ পুনর্বাসনের বাসিন্দা মৃত তোফাজ্জল হোসেনের ছেলে রোমান ও নোমানের সঙ্গে তার বন্ধুত্ব গড়ে উঠে। রোমান মাঝে মধ্যেই নাসরিনকে তাদের বাড়িতে বেড়াতে নিয়ে যেত। এ অবস্থায় গত ৬ অক্টোবর বিকেলে নিজের বাড়িতে বেড়াতে নিয়ে যাওয়ার কথা বলে নাসরিনকে নিয়ে যান রোমান। রাত দেড়টার দিকে রোমান তার বান্ধবীর বাবাকে মোবাইলে জানান নাসরিন পাগলামি করছে, আপনি এসে নিয়ে যান। সকালে যাওয়ার কথা বলে ফোন রেখে দেন নাসরিনের বাবা। এরপর ভোরে রোমান মোবাইলে নাসরিনের বাবাকে জানান, নাসরিন তার চাচাতো ভাই আকাশের বাড়িতে আত্মহত্যা করেছে। লাশ হাসপাতালের মর্গে আছে।

নিহতের বাবা নাসির উদ্দিন জানান, বন্ধুত্বের সম্পর্ক থাকায় মেয়ে নাসরিনকে তার বন্ধু রোমানের সঙ্গে যেতে দিয়েছেন। কিন্তু নিজের বাড়িতে না নিয়ে একটি ফাঁকা বাড়িতে মেয়েকে নিয়ে যান রোমান। সেখানে রাতভর তার অন্যান্য ছেলে বন্ধুদের নিয়ে ইয়াবা সেবনের আড্ডায় মেতে ছিল রোমান। একপর্যায়ে তারা  মেয়েকে মারধর করে হত্যার পর লাশ ধর্নার সঙ্গে ঝুলিয়ে রেখেছিল। তারা হয়তো মেয়েকে দলবেঁধে ধর্ষণও করেছে। মেয়ের হত্যাকারীদের দাবি করেন তিনি। 

সিরাজগঞ্জ থানার ওসি সিরাজুল ইসলাম জানান, ঘটনার পরের দিন আশ্রয়দাতা রোমানের বন্ধু আকাশকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তাকে জিজ্ঞাসাবাদে জানা গেছে, বাবা-মা ঢাকায় থাকায় বাড়িতে একাই থাকতেন তিনি। ঘটনার আগে গভীর রাতে মোটরসাইকেলে করে নাসরিনকে নিয়ে ওই বাড়িতে যান রোমান। সঙ্গে আরো ৩-৪ জন বন্ধু ছিল। ঘরের মধ্যে তারা সবাই একসঙ্গে ইয়াবা সেবন করেন। একপর্যায়ে নাসরিনকে নিয়ে রোমান আলাদা একটি কক্ষে যান। অন্যরা ঘরের মধ্যেই ইয়াবা সেবন করতে থাকেন। ভোরের দিকে আকাশসহ অন্যরা রোমানের কক্ষের ভেতর ধর্নার সঙ্গে নাসরিনকে ঝুলন্ত অবস্থায় দেখতে পান।

তিনি আরো বলেন, এ ঘটনায় পাঁচজনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত আরো ৩-৪ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেছেন নিহতের বাবা।

লালমোহননিউজ/-জেডি