ইউএনওর ওপর হামলা; গ্রেফতার আতঙ্কে গ্রাম শূন্য নারী-পুরুষ

ইউএনওর ওপর হামলা; গ্রেফতার আতঙ্কে গ্রাম শূন্য নারী-পুরুষ
প্রতিকী ছবি

ফরিদপুরের মধুখালীতে আশ্রয়ণ প্রকল্পের জায়গার মালিকানা নিয়ে বিরোধে ইউএনও আশিকুর রহমান চৌধুরীর ওপর হামলার ঘটনায় পৃথক দুটি মামলা হয়েছে। বৃহস্পতিবার রাত ও শুক্রবার সকালে এ দুটি মামলা করা হয় মধুখালী থানায়। 

দুই মামলায় আসামি করা হয়েছে ডুমাইন ইউনিয়ন পরিষদের ইউপি চেয়ারম্যান ও মধুখালী উপজেলা আওয়ামী লীগের নির্বাহী কমিটির সদস্য শাহ মোহাম্মদ আসাদুজ্জামানকে। এ পর্যন্ত পুলিশ দুই মামলার চারজনকে গ্রেফতার করেছে। 

ঘটনার সময় হামলায় ৪ পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন বলে জানিয়েছেন মধুখালী থানার ওসি। এ নিয়ে ১২ জনের আহতের খবর পাওয়া গেছে।

এদিকে এ ঘটনায় ডুমাইন ইউনিয়নের নিশ্চিন্তপুর গ্রাম এখন নারী-পুরুষশূন্য। পুলিশের গ্রেফতার এড়াতে বৃহস্পতিবার রাতেই নারী-পুরুষরা গ্রাম ছেড়েছে। শুক্রবার সকালে সরেজমিন নিশ্চিন্তপুর গ্রাম ঘুরে দেখা গেছে, গ্রামের অধিকাংশ বাড়িঘর তালাবদ্ধ। গ্রামে দেখা মেলেনি কোনো পুরুষ মানুষের। 

মধুখালী থানা সূত্রে জানা গেছে, একটি মামলার বাদী ইউএনও আশিকুর রহমান চৌধুরীর গাড়িচালক সুমন শেখ এবং অপর মামলার বাদী মধুখালী থানার উপপরিদর্শক (এসআই) প্রবীর কুমার বিশ্বাস। এ দুই মামলায় ৫৩ জনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে। এছাড়া অজ্ঞাতনামা আসামি দেখানো হয়েছে আরও দুইশ থেকে আড়াইশ জনকে।

এ মামলায় পুলিশ গ্রেফতার করেছে ডুমাইন ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারমান শাহ মোহাম্মাদ আসাদুজ্জামান, নিশ্চিন্তপুর গ্রামের প্রিন্স মোল্যা, ইব্রাহিম মোল্য ও কবিরুল ইসলামকে। 

আহত ইউএনও আশিকুর রহমান চৌধুরীকে ফরিদপুর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। তার অবস্থা আশঙ্কামুক্ত বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকরা। 

মধুখালীর এসিল্যান্ড শামীম আরা বলেন, নিশ্চিন্তপুর গ্রামে সরকারি প্রায় ২৫ একর খাসজমি উদ্ধার করা হয়। এর মধ্যে ৭ থেকে ৮ একর খাল ও বাকিটা সমতল। তিনি বলেন, জমিগুলো উদ্ধারের পর বেশ কয়েকজন ব্যক্তি অভিযোগ করে জানান- তাদের কাছে দলিল রয়েছে। আমরা তাদের আড়াই মাস সময় দিয়েছিলাম। কেউ কেউ জমির কাগজপত্র দেখাতে পেরেছেন। ফলে আমরা সেসব জায়গা থেকে সরে এসেছি। তবে বেশিরভাগ ব্যক্তিই তাদের সপক্ষে কোনো কাগজপত্র-দলিলাদি দেখাতে পারেননি।

মধুখালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শহীদুল ইসলাম বলেন, এ হামলার ঘটনায় পৃথক দুই মামলায় ৫৩ জনের নাম উল্লেখসহ দুইশ থেকে আড়াইশ অজ্ঞাত ব্যক্তিকে আসামি করা হয়েছে। ঘটনার পর হামলাকারীরা পলাতক রয়েছে। বর্তমানে এলাকার পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে। এছাড়া গ্রামবাসীর হামলায় চার পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন। এরা হলেন- এসআই প্রবীর কুমার বিশ্বাস, কনস্টেবল আলী হোসেন, মাহমুদ খান ও আবু হানিফ। খবর: যুগান্তর

-এইচপি