প্রতিনিধি, চরফ্যাশন (ভোলা): ভোলার চরফ্যাশনে ১৬৮ নং দক্ষিণ চর আইচা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগের জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক সহসভাপতি মো. আকতারের বিরুদ্ধে সাংবাদিকতার প্রভাব খাটিয়ে কর্মস্থলে অনিয়ম ও রাষ্ট্র বিরোধী কর্মকাণ্ড জড়িত থাকার অভিযোগ উঠেছে।
মো. রুহুল আমিন পন্ডিত নামক জনৈক এক ব্যক্তি তার বিরুদ্ধে শাস্তি মূলক ব্যবস্থা গ্রহণের দাবী করে জেলা প্রাথমিক অফিসার ভোলা বরাবর আবেদন করেছেন।
ভোলা জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার বরাবর করা অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, ভোলা জেলার চরফ্যাশন উপজেলার চরমানিকা ৮ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা আব্দুর রব মাষ্টারের ছেলে মো. আকতার হোসেন নিষিদ্ধ ছাত্র সংগঠন ছাত্রলীগের জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক সহসভাপতি ছিলেন। ২০২৩ সালে উপজেলার ১৬৮ নং দক্ষিণ চর আইচা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক হিসেবে বিদ্যালয়ে যোগদান করার পর থেকেই স্বৈরাচারী সরকারের দাপট দেখিয়ে মাসে ২/১ দিন বিদ্যালয় এসে পুরো মাসের স্বাক্ষর করতেন। প্রতিষ্ঠানের প্রধান হাজিরা খাতায় অনুপস্থিত করলে তা নিজ হাতে মুছে দিয়ে জোরপূর্বক স্বাক্ষর করতেন তিনি। প্রধান শিক্ষক ও সহকারীরা নিষেধ করলে তাদের সাথে অসৌজন্যমূলক আচরণ করার পাশাপাশি কয়েকজন সহকারীকে শারীরিক ভাবে লাঞ্চিত করেছেন।
অভিযোগ আরও উল্লেখ করেন, গত জুলাই বিপ্লবের মাসে ফ্যাসিস্ট বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় ১৪-০৭-২৪ থেকে ০৬-০৮-২৪ ইং পর্যন্ত কোন রকম ছুটি ছাড়া বিদ্যালয় অনুপস্থিতি থেকে ছাত্র আন্দোলন দমনে ঢাকায় অবস্থান করে সরাসরি অংশ গ্রহণ করেন। পাশাপাশি বর্তমানে বিদ্যালয়ে নিয়মিত কর্মকাণ্ডে অনিষ্টম কাবাচ্ছেমন্তবর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা, তথ্য উপদেষ্টা ও সমন্বয়ক সম্পর্কে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নেগেটিভ পোস্ট, শেয়ার ও কমেন্ট করে যাচ্ছেন অভিযুক্ত স্কুলশিক্ষক মো. আকতার হোসেন।
সরেজমিনে গিয়ে স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, স্কুল শিক্ষক আকতার বিদ্যালয়ে পাঠদান ফাঁকি দিয়ে সাংবাদিকতার নামে বিভিন্ন স্থানে সময় অতিবাহিত করেন। তবে সপ্তাহ শেষে প্রধান শিক্ষকসহ সংশ্লিষ্টদের ওপর সাংবাদিকতার ভয় দেখিয়ে ও প্রভাব খাটিয়ে হাজিরা খাতায় নিয়মিত উপস্থিতির স্বাক্ষর করেন। তিনি একজন প্রাথমিকের সহকারি শিক্ষক হয়ে ইতোমধ্যে নামে-বেনামে অনেক সম্পদ করেছেন বলে জানা গেছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় একব্যক্তি বলেন, স্কুল শিক্ষক আকতার এখন পর্যন্ত সহকারি শিক্ষক হিসেবে যে বেতন পেয়েছেন তা ফেরত পেতে দ্রুত আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের দাবী জানিয়েছেন তিনি।
১৬৮ নং দক্ষিণ চর আইচা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো.জাহিদুল ইসলাম বলেন, আকতার হোসেন আমার বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক। তিনি বিদ্যালয়ে যোগদানের পর কখনও নিয়মিত বিদ্যালয় আসতেন না। আমি শিক্ষক হাজিরা খাতায় অনুপস্থিত লিখলে, সে সাংবাদিকতার ও ক্ষমতার দাপট দেখিয়ে তা মুছে স্বাক্ষর করতেন। প্রতিবাদ করায় একাধিক সহকারী শিক্ষককে শারীরিক ভাবে লাঞ্চিত করেছেন আকতার। আমি চরফ্যাশন উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসকে তার বিষয়টি অবগত করেছি বহুবার। অদৃশ্য কারণে কোন ব্যবস্থা নেয়নি প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার।
অভিযোগের বিষয় ১৬৮ নং দক্ষিণ চর আইচা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক মো. আক্তার হোসেন বলেন, অনিয়ম তো দূরের কথা সাংবাদিকতা করি না আমি। আমার বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ সত্য নয়।
চরফ্যাশন উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মহা তাশেম উদ্দিন বলেন, জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার বরাবর দেয়া অভিযোগের কপি আমি হাতে পেয়েছি। তদন্তে অভিযোগ প্রমাণিত হলে যথাযথ কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে ব্যবস্থা গ্রহণ কর হবে।
লালমোহননিউজ/ -এইচপি
What's Your Reaction?