মৃত্যুও আলাদা করতে পারেনি তাদের

দুই সহোদর মাইদুল ইসলাম শাহাদাত ও রাহাদুল ইসলাম গোলাপ। দু’জনই একইসঙ্গে মাদরাসায় পড়তো। বাবা-মায়ের সংসারে সারা ঘর মাতিয়ে রাখতো। সেদিন অন্যদিনের মতো একই কক্ষে ঘুমিয়ে পড়ে তারা। রাতের আঁধারে বসতঘরে পেট্রল ঢেলে অগ্নিসংযোগের ঘটনায় একইসঙ্গে দু’জনের মৃত্যু হয়।
এই হৃদয়বিদারক ঘটনাটি ঘটেছে ফেনী পৌরশহরের মধ্যম বিরিঞ্চি ফকিরবাড়ি এলাকায়। বুধবার বিকেলে জানাযা শেষে পাশাপাশি কবরে তাদের শুইয়ে দেন স্বজনরা। জানাযা নামাজে আত্মীয়-স্বজনসহ এলাকার শত শত মুসল্লি অংশ নেয়। এ সময় এলাকায় এক হৃদয়বিদারক দৃশ্যের অবতারণ হয়। মা-বাবার আহাজারি দেখে অনেকে চোখের পানি ধরে রাখতে পারেনি।
অশ্রুসজল সাইদুল ইসলাম রনি জানান, মঙ্গলবার একসঙ্গে রাতের খাবার খেয়ে ঘুমিয়েছিল শাহাদাত ও গোলাপ। পেট্টল ঢেলে অগ্নিসংযোগে তারা মারা যায়। স্বামী-স্ত্রী দু’জন জীবিত উদ্ধার হলেও দুই ভাইয়ের মৃত্যু হয়েছে একসঙ্গে।
এদিকে, ফেনী জেনারেল হাসপাতালের মর্গে ময়নাতদন্ত শেষে বিকেলে একসঙ্গে দুটি লাশ বাড়িতে নেয়া হলে এক শোকাবহ পরিবেশ সৃষ্টি হয়। সকাল থেকে শত শত নারী-পুরুষ ঐ বাড়িতে ভিড় জমায়। দুই শিশু সন্তানকে হারিয়ে মা-বাবা ও স্বজনরা শোকে কাতর হয়ে পড়েছে। বাদ আসর ফকিরবাড়ি জামে মসজিদ প্রাঙ্গণে নামাজে জানাযা শেষে পারিবারিক কবরস্থানে তাদের দাফন করা হয়।
ফেনী মডেল থানার ওসি মোহাম্মদ শহীদুল ইসলাম চৌধুরী জানান, পরিবারের পক্ষ থেকে এখনো মামলা হয়নি। মামলা পেলে প্রয়োজনীয় আইনগত পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।
ঘটনার রহস্য উদ্ঘাটনে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পৃথক টিম কাজ করছে বলে জানান ফেনীর পুলিশ সুপার জাকির হাসান। তিনি বলেন, নিহতের পরিবারের পক্ষ থেকে পেট্রল ঢেলে অগ্নিসংযোগের যে অভিযোগ করা হচ্ছে সেটি খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
লালমোহননিউজ/ -এইচপি