শাশুড়িকে দাফন দেওয়ার কবরে শুয়ে পুত্রবধূর বাধা

বরিশালের বাবুগঞ্জে সম্পত্তির ভাগ-বাটোয়ারা দ্বন্দ্বে শাশুড়ির দাফনের জন্য খোঁড়া কবরে শুয়ে বাধা দিয়েছেন পুত্রবধূ। পরে পুলিশ গিয়ে তাকে হেফাজতে নিয়ে তার শাশুড়ির দাফন কাজ সম্পন্ন করা হয়। ঘটনাটি সোমবার (১৭ জুলাই) উপজেলার লোহালিয়া গ্রামে ঘটলেও মঙ্গলবার (১৮ জুলাই) এ সংক্রান্ত একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে।

গৃহবধূ শাহনাজ উপজেলার লোহালিয়া গ্রামের বাসিন্দা সৌদি প্রবাসী আব্দুর রহিমের স্ত্রী। আর মৃত আনোয়ারা বেগম ঐ গ্রামের মৃত মোবারক আলী খানের স্ত্রী।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে শাহনাজের প্রতিবেশীরা জানান, মৃত মোবারক ও আনোয়ারা দম্পতির পাঁচ কন্যা ও এক ছেলে রয়েছে। ছেলে আব্দুর রহিম সৌদি প্রবাসী। জমির ভাগ-বাটোয়ারা নিয়ে শাশুড়ি ও ননদদের সঙ্গে শাহনাজের বিরোধ চলছিল। শাহনাজের শাশুড়ি আনোয়ারা মারা যাওয়ার আগে দাফনের জন্য স্থান নির্ধারণ করে দিয়েছিলেন। সেখানে দাফনের জন্য তার কবরও খোঁড়া করা হয়।

ঐ জমি নিজেদের দাবি করে শাহনাজ তার শ্বশুরের কবরের পাশে শাশুড়িকে দাফন করতে বলেন। কিন্তু তার ননদরা মায়ের ওসিয়ত করা স্থানে দাফন করবেন বলে জানান। এ নিয়ে বিরোধের একপর্যায়ে শাহনাজ তার শাশুড়ির জন্য খোঁড়া কবরে শুয়ে পড়েন। এ খবর পেয়ে পুলিশ তাকে হেফাজতে নিয়ে যায়। পরে মুচলেকা নিয়ে তাকে ছেড়ে দিয়েছে পুলিশ।

ফেসবুকে ভাইরাল হওয়া ভিডিওতে দেখা গেছে, এক নারী খোঁড়া কবরে বসে ও শুয়ে রয়েছেন। স্থানীয়রা তাকে সেখান থেকে ওঠানোর চেষ্টা করছেন আর বলছেন, ‘আপন শাশুড়ি। এমন কাজ কি কেউ করে?’ তখন একজন তাকে বলছেন, ‘আপনি কাগজে না পাইলে কী করবেন? আপনি কী কবরে শুয়ে জায়গা (জমি) নেবেন? আপনি না পেলে কেমনে নেবেন?’ একপর্যায়ে কবরে শুয়ে পড়েন ঐ নারী। এ সময় কেউ কেউ ক্ষোভে তাকে চাপা দেওয়ার কথাও বলেন।

বাবুগঞ্জ থানার ওসি তুষার কান্তি মন্ডল বলেন, জমি নিয়ে বিরোধের জেরে শাহনাজ বেগম নামে এক নারী তার শাশুড়িকে কবর দিতে বাধা দেন। খবর পেয়ে ঘটনাস্থল থেকে তাকে পুলিশ হেফাজতে নেয়া হয়। ঐ গৃহবধূর কর্মকাণ্ডে তার গ্রামের মানুষের মধ্যে ক্ষোভ সৃষ্টি হয়েছে। পরে গৃহবধূ শাহনাজকে পুলিশ হেফাজতে নিয়ে তার শাশুড়ির দাফন সম্পন্ন করা হয়। পরে শাহনাজের মুচলেকা নিয়ে তার ভাইয়ের জিম্মায় ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।