শিশু সন্তানকে বুকে জড়িয়ে মেঘনায় ঝাঁপ দিলেন মা, অতঃপর...

হাসান লিটন, প্রতিনিধি, চরফ্যাশন (ভোলা): তুচ্ছ ঘটনায় স্বামীর সঙ্গে অভিমান করে সন্তান বুকে জড়িয়ে মেঘনা নদীতে ঝাঁপ দিয়েছেন এক মা। ভাগ্যক্রমে মা বেঁচে গেলেও চিরতরে হারিয়ে গেছে দেড় বছর বয়সী পুত্র ইব্রাহিম। স্বামী মোবাইল ফোন ভেঙে ফেলায় মাইমুনা বেগম সুখী নামের ওই নারী এ ঘটনা ঘটিয়েছেন।
ভোলার চরফ্যাশনে বেতুয়া লঞ্চ ঘাট সংলগ্ন প্রশান্তি পার্ক এলাকায় রবিবার দুপুরে এই ঘটনা ঘটে। পরে স্থানীয় দুই যুবক মা ও শিশুটিকে নদীতে ভাসতে দেখে উদ্ধার করে চরফ্যাশন হাসপাতালে নিলে চিকিৎসক শিশুটিকে মৃত ঘোষণা করেন।
নিহত শিশু ইব্রাহিম জিন্নাগড় ৫ নম্বর ওয়ার্ডের আবদুর রহিমের ছেলে। আর শিশুটির মা মাইমুনা বেগম সুখী চরফ্যাশন পৌরসভার ৫ নম্বর ওয়ার্ডের শরিফপাড়া এলাকার মো. ইয়াছিনের মেয়ে।
প্রত্যক্ষদর্শী শাকিল জানান, দুপুরে ওই নারী শিশুপুত্রকে কোলে নিয়ে বেতুয়া প্রশান্তি পার্কের মেঘনা নদীর পাড়ে বসে ছিলেন। কিছুক্ষণ পর দেখতে পান ওই নারী শিশুপুত্রকে বুকে নিয়ে মেঘনার ঢেউয়ের সঙ্গে হাবুডুবু খাচ্ছেন। তাৎক্ষণিক তিনি স্থানীয় ব্যবসায়ীদের সহযোগিতায় মা ও ছেলেকে উদ্ধার করে চরফ্যাশন হাসপাতালে নিয়ে আসেন। তবে পথেই শিশুটির মৃত্যু হয়।
ওই গৃহবধুর মা তাছনুর জানান, চার বছর আগে জিন্নাগড় ইউনিয়নের লোকমান মেম্বার বাড়ির আবদুর রহিমের সঙ্গে পারিবারিকভাবে তার মেয়েকে বিয়ে দেন। মেয়ের ঘরে প্রথম সন্তান জন্মের পরপরই জামাতা রহিম ও তার পরিবারের সদস্যরা সুখীর ওপর নানাভাবে মানসিক নির্যাতন শুরু করে। এসব বিষয় মেয়ে তাকে একাধিক বার জানিয়েছেন।
তিনি বলেন, ‘রবিবার দুপুরে জামাতা আবদুর রহিম আমাকে ফোন করে জানতে চায় যে মাইমুনা আমার বাড়িতে এসেছে কিনা। এমন খবর শুনে আমি খুবই বিচলিত হয়ে পড়ি। মেয়ের হাতে কোনো মোবাইল না থাকায় তার অবস্থান নিশ্চিত করতে পারিনি। দুপুরে খবর পাই যে মেয়ে নদীতে ঝাঁপ দিয়েছে আর আমার নাতি মারা গেছে।’
আবদুর রহিম বলেন, ‘আজ স্ত্রীর সাথে আমার ঝগড়া হয়। কিন্তু সেই ঝগড়ার কারণে সে যে এমন কাজ করবে তা আমার কল্পনার বাইরে ছিলো।’
চরফ্যাশন থানার উপ-পরিদর্শক মো. হেলাল উদ্দিন জানান, পরিবারের কোনো অভিযোগ না থাকায় আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ময়না তদন্ত ছাড়াই শিশুটির মরদেহ স্বজনের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।
লালমোহননিউজ/ -এইচপি