সিজারের পর পেটে গজ রেখে সেলাই, কাটল পাঁচ মাস

সিজারের পর পেটে গজ রেখে সেলাই, কাটল পাঁচ মাস
ছবি: সংগৃহীত

ফরিদপুরের ভাঙ্গা উপজেলা সদরের গ্রিন (প্রা.) হাসপাতাল অ্যান্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টারে এক প্রসূতির সিজারিয়ান অপারেশনের পর পেটে গজ ও মলমূত্র রেখে সেলাইয়ের অভিযোগ উঠেছে। এরপর রোগীকে হাসপাতাল থেকে ছাড়পত্র দিয়ে বাড়িতে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে।

রোববার বিকেলে ৩টার দিকে ভাঙ্গা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে একটি লিখিত অভিযোগ দাখিল করেছেন ভুক্তভোগী নারীর স্বামী তুষার মিয়া।

লিখিত অভিযোগে তুষার জানান, গত ২৪ মার্চ তার সন্তানসম্ভবা স্ত্রী অ্যামি আক্তারকে ভাঙ্গার গ্রিন (প্রা.) হাসপাতাল অ্যান্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টারে ভর্তি করেন। এরপর সিজারিয়ান অপারেশনের মাধ্যমে তাদের একটি ছেলে সন্তানের জন্ম হয়। এরপর ২৭ মার্চ তার স্ত্রীকে হাসপাতাল থেকে ছাড়পত্র দিয়ে বাড়িতে পাঠানো হয়। কিছুদিন পর তার স্ত্রী অসুস্থ হয়ে পড়েন। তাকে আবার ঐ হাসপাতালে নিয়ে ডাক্তার দেখানো হয়। তবে সেখানকার চিকিৎসকরা পরীক্ষা করে নির্দিষ্ট কোনো রোগ নির্ণয় করতে পারেননি।

সেখান থেকে জানানো হয়, অ্যামি আক্তারের থাইরয়েডের সমস্যা হয়েছে। এরপর তাদের পরামর্শে ফরিদপুর শহরে এসে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের শরণাপন্ন হলেও তার স্ত্রীর কোনো রোগ ধরতে পারেননি।

এদিকে অ্যামির অসুস্থতা বাড়তে থাকলে তাকে গত ২২ আগস্ট ঢাকায় নিয়ে ল্যাবএইড হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে অপারেশনের পর রোগীর পেট থেকে পুরোনো ও পচা গজ ও মলমূত্র বের করা হয়। তুষার মিয়া বলেন, আমার স্ত্রী এখনো অসুস্থ। হাসপাতালে ভর্তি রয়েছে। আমি এর যথাযথ বিচার চাই।

এ ব্যাপারে ভাঙ্গা গ্রিন (প্রা.) হাসপাতাল অ্যান্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টারের পরিচালক হাফিজুর রহমান বলেন, পাঁচ মাসের আগের ঘটনা এটি। এতদিন পরে এ নিয়ে অভিযোগ কেন? এছাড়া ঐ রোগী এবং তার লোকজন হাসপাতালে এসেছিলেন। পেটে গজ-ব্যান্ডেজ থাকলে এতদিনে রোগী সুস্থ থাকার কথা নয়। সিজারের সময় আমাদের হাসপাতাল থেকে কোনো সমস্যা হয়নি।

ভাঙ্গা গ্রিন (প্রা.) হাসপাতাল অ্যান্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টারে সিজারিয়ান অপারেশন করা ডাক্তার তামান্না আলমের সঙ্গে যোগাযোগ করেও তাকে পাওয়া যায়নি। ডাক্তারের সঙ্গে যোগাযোগ বিষয়ে ঐ ডায়াগনস্টিক সেন্টারের পরিচালক হাফিজুর রহমান বলেন, ডাক্তারের অনুমতি নিয়ে মোবাইল নম্বর দিতে হবে। আমি যোগাযোগ করে পরবর্তীতে আপনার সঙ্গে কথা বলার ব্যবস্থা করে দেব।

এ বিষয়ে ভাঙ্গার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কাজী মাহবুব উর রহমান বলেন, এ সংক্রান্ত একটি অভিযোগ পেয়েছি। বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে। সত্যতা পেলে তদন্তপূর্বক আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।

লালমোহননিউজ/ -এইচপি