স্বপ্ন পাহারায় জীবন চলে তাদের!

স্বপ্ন পাহারায় জীবন চলে তাদের!
ছবি: লালমোহন নিউজ

একটি ব্যবসা প্রতিষ্ঠান। যেখানে থাকে লাখ লাখ টাকার মালামাল। আর এ ব্যবসা প্রতিষ্ঠানকে কেন্দ্র করে নানা রঙের স্বপ্ন বুনেন মালিকরা। ব্যবসায়ীদের সে সব স্বপ্ন ঘেরা ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলো পাহারা দেন নৈশপ্রহরী বা পাহারাদাররা। যার বিনিময়ে ওইসব পাহারাদাররা পান মাসিক বেতন। এ বেতন দিয়েই চলে তাদের স্ত্রী, সন্তান আর মা-বাবাদের নিয়ে সংসার। বাজার ব্যবসায়ী সমিতির পক্ষ থেকে এসব পাহারাদারদের বেতন পরিশোধ করা হয়।

ভোলার লালমোহন পৌরশহরের মধ্য বাজারের এমন নৈশপ্রহরী রয়েছেন ৬ জন। এঁরা রাত জেঁগে ব্যবসায়ীদের বুনা ওই স্বপ্নের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলো পাহারা দিয়ে নিরাপদে রাখেন। ব্যবসায়ীদের সম্পদ অক্ষত রাখতে প্রতিদিন রাত ১১ টা থেকে ভোর ৬ টা পর্যন্ত কাটে তাদের নির্ঘুম রাত। যার বিনিময়ে প্রতি মাসে ৭ হাজার টাকা করে বেতন পান তারা।

ওই পাহারাদারদের একজন ৪০ বছরের যুবক মো. জসিম উদ্দিন। তিনি পৌরশহরের ৫ নম্বর ওয়ার্ডের সবুজবাগ এলাকার বাসিন্দা। বিগত ১৫ বছর ধরে বাজার পাহারাদার হিসেবে কাজ করছেন জসিম। সংসারে তার এক মেয়ে, দুই ছেলে, স্ত্রী ও বাবা-মা আছেন। বাজার পাহারার বেতনে চলে তার সংসার।

সবুজবাগ এলাকার আব্দুল বারেক (৫২)। তিনিও গত ৮ বছর ধরে বাজার পাহারা দিচ্ছেন। তার সংসারে বর্তমানে এক মেয়ে আর স্ত্রী রয়েছে। ওই মেয়ে সপ্তম শ্রেণিতে পড়ে। আব্দুল বারেক সংসারের প্রয়োজনীয় খরচ ও মেয়ের পড়ালেখার ব্যয় বহন করেন মাসিক বেতন থেকেই।

জানা যায়, লালমোহন পৌরশহরের মধ্যবাজারের ছয়জন সহ উত্তর বাজার এলাকায় দুইজন, ডাকবাংলো এলাকায় একজন, হাইস্কুল সুপার মার্কেটে দুইজন, থানার মোড়ে একজন এবং উপজেলা পরিষদ সংলগ্ন এলাকায় একজনসহ লালমোহন পৌরশহরে মোট ১৩জন পাহারাদার রয়েছেন।

এসব পাহারাদাররা বলেন, মাত্র ৭ হাজার টাকা বেতনে তারা এ কাজ করছেন। এছাড়া বিশেষ কোনো দিনে তাদের অতিরিক্ত সম্মানি প্রদান করা হয় না। তাই বর্তমান বাজারের প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র কিনে সংসার চালাতে হিমশিম খেতে হচ্ছে এসব পাহারাদারদের। যার জন্য মাস শেষে দার-দেনায় জড়িয়ে পড়ছেন তারা। তাই এসব পাহারাদারদের দাবি, তাদের বেতন নূন্যতম ১০ হাজার টাকা নিশ্চিতসহ বিশেষ দিনে তাদের সম্মানির ব্যবস্থা করা। তাহলেই এসব পাহারাদাররা তাদের পরিবার-পরিজন নিয়ে কিছুটা ভালোভাবে দিন পার করতে পারবেন।

এ ব্যাপারে লালমোহন বাজার ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি মো. মোস্তফা মিয়া জানান, বাজারের এসব পাহারাদারদের বেতন আগে ৫ হাজার টাকা ছিল। মাসখানেক আগে সেই বেতন ৭ হাজার টাকা করা হয়েছে। আপাতত তাদের বেতন বাড়ানো সম্ভব না। তবে পরিস্থিতি অনুযায়ী সামনে এসব পাহারাদারদের বেতন বাড়ানোর বিষয়টি বিবেচনা করা হবে।