করোনা ও যুদ্ধ সাড়ে ১৬ কোটি মানুষকে দারিদ্র্যে বানিয়েছে

করোনা মহামারি, জীবনযাত্রার ব্যয় বেড়ে যাওয়া ও ইউক্রেন যুদ্ধ বিশ্বজুড়ে মানুষকে চরম সংকটে ফেলেছে। এসব কারণে বিশ্বজুড়ে দারিদ্র্যের হার বেড়েছে।
বৃহস্পতিবার (১৩ জুলাই) এক প্রতিবেদনে জাতিসংঘ জানায়, ২০২০ সাল থেকে বিশ্বজুড়ে প্রায় সাড়ে ১৬ কোটি মানুষ দরিদ্র হয়েছে। এ পরিস্থিতিতে উন্নয়নশীল দেশগুলোর পক্ষ থেকে আপাতত ঋণ পরিশোধ স্থগিত রাখার আহ্বান জানানো হয়েছে।
জাতিসংঘ উন্নয়ন কর্মসূচির (ইউএনডিপি) ওই প্রতিবেদন বলছে, করোনা মহামারি, জীবনযাত্রার ব্যয় বেড়ে যাওয়া ও ইউক্রেন যুদ্ধের জেরে ২০২০ থেকে ২০২২ সালের শেষ নাগাদ বিশ্বের প্রায় সাড়ে ৭ কোটি মানুষ অতিদরিদ্র হয়েছে। তাদের প্রতিদিন ২ ডলার ১৫ সেন্ট বা তার কম আয়ে জীবন যাপন করতে হচ্ছে। একই সময়ে ৯ কোটির বেশি মানুষ দারিদ্র্যসীমার নিচে নেমেছে। তাদের দৈনিক ৩ ডলার ৬৫ সেন্টের কম আয়ে জীবন কাটাতে হচ্ছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ‘সর্বাধিক দরিদ্ররা সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয় এবং ২০২৩ সালে তাদের আয় প্রাক-মহামারি স্তরের নিচে থাকবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।’
ইউএনডিপির প্রধান আচিম স্টেইনার এক বিবৃতিতে বলেছেন, ‘গত তিন বছরে যেসব দেশ নিরাপত্তা খাতে বিনিয়োগ করেছে তারা উল্লেখযোগ্য সংখ্যক মানুষকে দারিদ্র্যের মধ্যে পড়া ঠেকাতে পেরেছে। অত্যধিক ঋণগ্রস্ত দেশগুলোতে উচ্চ স্তরের ঋণ, অপর্যাপ্ত সামাজিক ব্যয় এবং দারিদ্র্যের হারে উদ্বেগজনক বৃদ্ধির মধ্যে একটি সম্পর্ক রয়েছে।’
প্রতিবেদনে অর্থনৈতিকভাবে সংগ্রামরত দেশগুলোতে সামাজিক ব্যয়ের অর্থায়ন এবং সামষ্টিক অর্থনৈতিক ধাক্কাগুলির প্রভাব মোকাবিলার জন্য ঋণ পরিশোধে সময় দেওয়ার জন্য উন্নত দেশগুলোর প্রতি আহ্বান জানানো হয়েছে।
এদিকে গত বুধবার প্রকাশিত জাতিসংঘের আরেকটি প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বিশ্বের প্রায় ৩৩০ কোটি মানুষ এমন দেশে বসবাস করে, সেসব দেশ শিক্ষা ও স্বাস্থ্য খাতের চেয়ে ঋণের সুদ পরিশোধে বেশি অর্থ ব্যয় করে। এমনকি উন্নয়নশীল কয়েকটি দেশ তুলনামূলক কম ঋণ নিলেও উচ্চ সুদহারের কারণে বেশি অর্থ ব্যয় করতে হচ্ছে।
সামগ্রিক পরিস্থিতি নিয়ে বলতে গিয়ে চলতি সপ্তাহের শুরুতে জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস বলেছিলেন, আন্তর্জাতিক আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোতে সংস্কার জরুরি। তিনি বলেন, ‘আমাদের বৈশ্বিক আর্থিক ব্যবস্থায় সংস্কার আনতে হবে। এ ব্যবস্থা বেশ পুরোনো এবং তা ঔপনিবেশিক শক্তির গতিশীলতাকে চিহ্নিত করে।’
লালমোহননিউজ/ -এইচপি