ইমরানের ঘাড়ে ১২১ মামলা

ইমরানের ঘাড়ে ১২১ মামলা
ছবি: সংগৃহীত

পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের ঘাড়ে ঝুলছে ১২১টি মামলা। রাষ্ট্রদ্রোহ থেকে শুরু করে ধর্ম অবমাননা, সহিংসতা এমনকি সন্ত্রাসবাদের প্ররোচনার মতো ভয়ংকর মামলা করা হয়েছে তার বিরুদ্ধে।

কবে খুলবে এসব মামলার জট? কতদিনে ছাড়া পাবেন তিনি-তা নিয়েও রয়েছে ঘোর অনিশ্চয়তা। পাকিস্তানের বড় বড় আইনজীবী ও খ্যাতিমান রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, সরকারের লক্ষ্য হলো আগামী নির্বাচন পর্যন্ত ইমরান খানকে কারাবন্দি করে রাখা।

তার এ পরিণতি সম্পর্কে বিরোধী রাজনীতিকরা বলছেন, সাবেক প্রধানমন্ত্রীসহ শীর্ষ নেতাদের সঙ্গে যে আচরণ করেছিলেন ইমরান, এখন সেই পরিণতিই বরণ করতে হচ্ছে তাকেও। বিশ্লেষকদের কেউ কেউ আবার বলছেন, শুধু আটকে রাখা নয়, পাকিস্তানের প্রধান বিরোধী দল হিসাবে মাথা তুলে দাঁড়ানো পিটিআইকে ভেঙে টুকরো টুকরো করে ফেলার পরিকল্পনাও থাকতে পারে সরকারের।

এনডিটিভি। সম্প্রতি ইমরানের নেতৃত্বে পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফ পার্টি ইসলামাবাদ হাইকোর্টে (আইএইচসি) মামলার একটি তালিকা জমা দিয়েছে। তালিকা অনুযায়ী, ইমরান খানের বিরুদ্ধে লাহোরে ১২টি সন্ত্রাসবাদের মামলা, ফয়সালাবাদে ১৪টি আর সারা দেশে ২২টি। জঙ্গিবাদ ইস্যুতে সেনা কর্মকর্তাদের হত্যাচেষ্টার মামলাও করা হয়েছে ইমরানের বিরুদ্ধে।

সন্ত্রাসবাদের অভিযোগে শুধু ইসলামাবাদেই রয়েছে ৩১টি মামলা। মঙ্গলবার আল কাদির ট্রাস্ট মামলায় গ্রেফতারের পর সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের পরিণতি এবং তার মামলার আইনি প্রক্রিয়া নিয়ে চলছে নানা হিসাব-নিকাশ। এই মুহূর্তে মূলত দুটি পথই খোলা আছে পিটিআই প্রধানের সামনে। হয় রিমান্ড শেষে আদালত থেকে জামিন নেওয়া, অথবা জেলে গিয়ে মামলায় লড়ে যাওয়া।

আইনজীবী আর বিশ্লেষকরা বলছেন, এরপর জামিন আবেদন করলেও তা কার্যকর করার আগেই ফাঁসিয়ে দেওয়া হবে অন্য মামলায়। কারণ সরকারের লক্ষ্যই হলো নির্বাচন পর্যন্ত ইমরানকে আটকে রাখা। এ বিষয়ে ইউনিভার্সিটি অব সিঙ্গাপুরের গবেষক ড. অমিত রঞ্জন বলেন, পিটিআই নেতাদের গ্রেফতারের ধরন খেয়াল করলে দেখা যাবে, প্রথমে ইমরান খানকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এরপর দলের নেতৃত্ব ধরতে পারেন এমন সব নেতাকে একে একে গ্রেফতার করা হচ্ছে।

অর্থাৎ কোনোভাবেই দল পিটিআই যেন নির্বাচনে দাঁড়াতে না পারে সেটাই করতে চাইছে সরকার। তাই এটা নিশ্চিত যে, নির্বাচনের আগ পর্যন্ত কারামুক্ত হতে পারবেন না ইমরান খান। পাকিস্তানের ক্ষমতাসীন জোটের আসিফ আলি জারদারি এবং খাকান আব্বাসীর মতো শীর্ষ নেতাদের বক্তব্যেই স্পষ্ট হয়েছে, দীর্ঘ সময় আটক রাখতেই মামলার জট তৈরি করা হয়েছে ইমরান খানের বিরুদ্ধে।

দেশটির সাবেক প্রধানমন্ত্রী শহিদ খাকান আব্বাসি বলেন, ইমরান খান কি নওয়াজ শরিফকে গ্রেফতার করেননি? লাহোর বিমানবন্দরে নামার পরই তাকে গ্রেফতার করা হয়েছিল। শুধু কারাবন্দিই নয়, তাকে রাজনীতি থেকেও নিষিদ্ধ করা হয়েছে। এখন সেই একই পরিণতি ভোগ করতে হচ্ছে ইমরানকেই।

-এইচপি