মরক্কোয় ভূমিকম্পে প্রাণহানি দুই হাজার ছাড়িয়েছে, আতঙ্কে রাস্তায় ঘুমাচ্ছে মানুষ

ভূমিকম্পে বিধ্বস্ত মরক্কোয় প্রাণহানি দুই হাজার ছাড়িয়েছে। গুরুতর আহত আরো প্রায় দেড় হাজার মানুষ। উদ্ধারকাজে যোগ দিয়েছে সেনাবাহিনী। বিগত একশ বছরেও এমন ভয়াবহ ভূমিকম্প দেখেননি দেশটির বাসিন্দারা। মাত্র ২০ সেকেন্ডেই ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয় কয়েকটি শহর। অনেকে ঘুমের মধ্যেই প্রাণ হারান।
এই ভূমিকম্পে সবচেয়ে বেশি প্রাণহানি হয়েছে দেশটির আল হাউজ প্রদেশে। বাড়িঘর বিধ্বস্ত হওয়ায় খোলা আকাশের নিচে রাত কাটিয়েছেন হাজারো মানুষ। এখনো বহু প্রত্যন্ত পাহাড়ি এলাকায় পৌঁছাতে পারেনি জরুরি বিভাগের সদস্যরা। খাবার ও বিশুদ্ধ পানির তীব্র সংকট দুর্যোগকবলিত এলাকাগুলোয়।
সংবাদমাধ্যম বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, দেশটির মানুষজন এখন আফটারশক হতে পারে এমন আতঙ্কে আছে। এ নিয়ে তারা বাড়ি ফিরছে না। রাস্তার মধ্যে দিন রাত পার করছেন। দেশটিতে এত প্রাণহানির ঘটনায় তিন দিনের জাতীয় শোক ঘোষণা করা হয়েছে। উদ্ধারকারীরা এখন বাড়ির ধবংস্তুপ ও দুর্গম পাহাড়ি এলাকায় তল্লাশি অভিযান জোরদার করেছে।
সামাজিক মাধ্যমে পোস্ট করা ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে, মারাকেশে একের পর এক বাড়ি ভেঙে পড়েছে। পর্যটকদের রেস্তোরাঁ থেকে বের করে নিয়ে আসা হচ্ছে। ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ সাইটও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তার দেওয়ালে ফাটল দেখা দিয়েছে। কিছু জায়গায় দেওয়াল ভেঙেছে।
মার্কিন ভূতাত্ত্বিক জরিপ (ইউএসজিএস) জানিয়েছে, ভূমিকম্পটির উৎপত্তিস্থল ছিল মারাকেশ শহর থেকে ৭১ কিলোমিটার দূরে আটলাস পর্বতমালা এলাকার ১৮ দশমিক ৫ কিলোমিটার গভীরে।
সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা জানিয়েছে, ভূমিকম্পের উৎপত্তিস্থলের কাছে তাফেঘাগে গ্রামের কোনো বাড়িঘর আর দাঁড়িয়ে নেই। ওই গ্রামের বাসিন্দা ওমর বেনহান্না (৭২) সংবাদমাধ্যম এএফপিকে বলেছেন, আমার তিনজন নাতিনাতনি এবং তাদের মা মারা গেছেন এবং এখনো তারা ধ্বংস্তূপের নীচেই। এর কিছুক্ষণ আগেই আমরা একসঙ্গে খেলছিলাম।
প্রাথমিক তথ্য অনুযায়ী আল হৌজ, মারাক্কেশ, আজিলাল সহ কয়েকটি শহরে অনেকে মারা গেছে। এই সংখ্যা নির্ধারণ করতে আরও কয়েকদিন লাগবে। এছাড়া আরও অনেককে হাসপাতালে নেয়া হয়েছে।
লালমোহননিউজ/ -এইচপি