‘ভাগ হয়ে যেতে পারে ভারত’
মন্তব্য ওবামার
তিনদিনের রাষ্ট্রীয় সফরে যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থান করছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। তবে এই সফরে মুসলিমসহ ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের মানবাধিকার নিয়ে প্রশ্নের মুখে পড়েছেন তিনি। এসবের মধ্যেই ভারত নিয়ে বিস্ফোরক মন্তব্য করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা।
তিনি বলেছেন, মুসলিমদের অধিকারকে সম্মান না করলে ভারত ভেঙে টুকরো টুকরো হয়ে যেতে পারে। শুক্রবার (২৩ জুন) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বৃহস্পতিবার সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনএন’কে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে বলেছেন, মুসলিম সংখ্যালঘুদের সম্মান না করা হলে ভারতের ‘ছিন্নভিন্ন হয়ে যাওয়ার’ ঝুঁকি রয়েছে।
এসময় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে বৈঠকের সময় তার কাছে বিষয়টি উত্থাপন করতে বর্তমান প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনকে আহ্বানও জানান তিনি।
ওবামা বলেন, প্রধানমন্ত্রী মোদিকে আমি ভালো করেই জানি। আমি যদি এখন তার সঙ্গে দেখা করতাম তাহলে তাকে বলতাম, আপনি যদি ভারতে জাতিগত সংখ্যালঘুদের অধিকার রক্ষা না করতে পারেন, তাহলে ভারত টুকরো টুকরো হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
মোদির সঙ্গে প্রেসিডেন্ট বাইডেনের বৈঠক প্রসঙ্গে ওবামা বলেন, প্রেসিডেন্ট বাইডেনের উচিত মোদির কাছে হিন্দু সংখ্যাগরিষ্ঠ ভারতে মুসলিম সংখ্যালঘুদের অধিকার সুরক্ষার বিষয়টি উত্থাপিত করা। তবে এটাও ঠিক যে, মিত্র দেশগুলোর মানবাধিকার ইস্যুতে কথা বলাটা বেশ ‘জটিল’।
ওবামার ওই মন্তব্যের কয়েক ঘণ্টা পর মোদির সঙ্গে যৌথ সংবাদ সম্মেলনে বাইডেন বলেন, হোয়াইট হাউজে আলোচনার সময় মোদির সঙ্গে মানবাধিকার ও অন্যান্য গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ নিয়ে আলোচনা করেছি। যুক্তরাষ্ট্র ও ভারতের ‘ডিএনএতে’ গণতন্ত্র মিশে রয়েছে।
এদিকে, নরেন্দ্র মোদির দাবি, তার সরকারের অধীনে ভারতে সংখ্যালঘুদের প্রতি কোনো বৈষম্য করা হয় না। ভারতে ধর্মীয় বৈষম্যের অস্তিত্ব রয়েছে তা মানতে নারাজ তিনি। যদিও ভারতে ধর্মীয় সংখ্যালঘু, ভিন্নমতাবলম্বী ও সাংবাদিকদের নির্যাতনের বিষয়ে বিস্তারিত অভিযোগ সামনে এনেছে বহু মানবাধিকার গোষ্ঠী ও খোদ যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তর।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের আমন্ত্রণে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রে রাষ্ট্রীয় সফর করছেন। ২০১৪ সালে প্রথমবার ভারতের প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পর তিনি বেশ কয়েকবারই দেশটিতে সফরে গেছেন। তবে মার্কিন প্রেসিডেন্টের আমন্ত্রণের কারণে মোদির এ সফরটি যুক্তরাষ্ট্রে তার প্রথম রাষ্ট্রীয় সফর বলে বিবেচিত হচ্ছে।
গুরুত্বপূর্ণ এ সফরের শুরুতেই মানবাধিকার নিয়ে প্রশ্নের মুখে পড়েছেন মোদি। এমনকি, তার মানবাধিকার লঙ্ঘন নিয়ে প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনকে চিঠিও লিখেছেন ৭৫ জন মার্কিন আইনপ্রণেতা। ওই চিঠিতে ওয়াশিংটন সফরের সময় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির কাছে ভারতে মানবাধিকারের বিষয়গুলো উত্থাপন করার জন্য মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের কাছে অনুরোধ তারা।
মার্কিন কংগ্রেসের সিনেট ও হাউস অব রিপ্রেজেন্টেটিভসের এই আইনপ্রণেতারা সবাই ডেমোক্র্যাট দলীয়।
-এইচপি