বোরহানউদ্দিনে বিয়ের দাবিতে ৩দিন ধরে প্রেমিকের বাড়িতে তরুণীর অনশন
জে.এম. মমিন, প্রতিনিধি, বোরহানউদ্দিন (ভোলা): ভোলার বোরহানউদ্দিন উপজেলায় বিয়ের দাবিতে প্রেমিকের বাড়িতে ৩দিন ধরে অনশন করছেন এক তরুণী। দীর্ঘদিনের প্রেমের সম্পর্ক থাকার পর বিয়ে করতে রাজি না হওয়ায় গত মঙ্গলবার (২৯ অক্টোবর) সকাল থেকে প্রেমিক রাকিব কাজীর বাড়িতে বিয়ের দাবিতে অনশন করছেন ওই তরুণী। তবে এরপর থেকে লাপাত্তা প্রেমিক রাকিব।
তিনি উপজেলার সাচড়া ইউনিয়নের ৬ নম্বর ওয়ার্ডের কাজী বাড়ির মোস্তাফিজ কাজীর ছেলে। অনশনরত ওই তরুণীও একই গ্রামের বাসিন্দা। রাকিব বিয়ে না করলে আত্মহত্যা করবেন বলেও দাবি করেছেন ওই তরুণী।
বিয়ের দাবিতে অনশনরত ওই তরুণী জানান, রাকিবের সঙ্গে আমার বিগত ছয় মাস যাবত প্রেমের সম্পর্ক রয়েছে। যার ফলে সে আমাকে বিভিন্ন জায়গায় ঘুরতে নিয়ে গেছেন। এমনি একদিন বিয়ের প্রতিশ্রতি দিয়ে আমাকে চরফ্যাশন নিয়ে শারীরিক সম্পর্ক করতে বাধ্য করেন। এরপর বেশ কয়েকবার রাকিব আমার সঙ্গে শারীরিক সম্পর্কে লিপ্ত হয়।
কয়েকদিন আগ থেকে হঠাৎ করেই রাকিব আমার সঙ্গে কথা বলা বন্ধ করে দিয়ে পরিবারের সিদ্ধান্তে অন্যত্র বিয়ের পরিকল্পনা করেন। এ সংবাদ পেয়ে আমি আমার ভালোবাসা রক্ষার জন্য এবং শারীরিক সম্পর্কের কলঙ্ক থেকে মুক্ত হতে তার বাড়িতে এসেছি। রাকিব আমাকে বিয়ে না করা পর্যন্ত আমি এ বাড়ি ছাড়বো না। আমার এ যৌক্তিক দাবি না মানলে বা আমাকে সরিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করলে আমি এখানেই আত্মহত্যা করবো।
এদিকে প্রেমিক রাকিব পালিয়ে যাওয়ায় তার সঙ্গে যোগাযোগ করা যায়নি। তার ব্যবহারিত মোবাইলে একাধিকবার ফোন দিয়েও ফোনটি বন্ধ পাওয়া গেছে।
তবে রাকিবের বাবা মোস্তাফিজ কাজী বলেন, আমার ছেলে এই মেয়ের সঙ্গে সম্পর্কের অথবা বিয়ের কথা কখনোই আমাদেরকে বলেনি। এই মেয়েটির আগে আরো দুটি বিয়ে হয়েছে, সেগুলো টিকেনি। এখন তাকে আমার পুত্রবধূ করলে সে সংসার কিভাবে টিকবে? রাকিব এখন বাসায় নেই। সে ঢাকায় চলে গেছে। তার সঙ্গে কোনোভাবে যোগাযোগ করতে পারছি না। কোনোভাবে রাকিবের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারলে বিষয়টির একটি সমাধান দেওয়া যেতো।
অনশনরত ওই তরুণীর মা জানান, মোবাইলের মাধ্যমে রাকিব এবং আমার মেয়ের পরিচয় হয়। ওই পরিচয় থেকে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। ছেলেটি আমার মেয়ের সঙ্গে প্রতারণা করে এখন অন্য জায়গায় বিয়ে করতে চাচ্ছে। ওই খবর পেয়ে আমার মেয়ে ৩দিন ধরে কিছু না খেয়ে রাকিবের বাড়িতে গিয়ে অনশন করছে।
সাচড়া ইউপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান মহিউদ্দিন মোল্লা বলেন, বিষয়টি আমাকে অবগত করলে সমাধানের লক্ষে ওইদিনই আমি রাকিবের বাড়িতে গিয়ে তার মা-বাবা এবং মেয়ের মা ও প্রতিবেশীদের নিয়ে আলোচনা করেছি। পরে সকলের সম্মতিতে ও ছেলের বাবা আগ্রহ প্রকাশ করায় ওই মেয়েকে বুঝিয়ে ছেলের বাসায় ছেলের বাবার জিম্মায় রেখেছি। দুইপক্ষের সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে সুন্দর একটি সমাধানের চেষ্টায় আছি। তবে তিন দিন অতিবাহিত হলেও রাকিব বাসায় না আসায় কোনো সমাধান দেওয়া যাচ্ছে না। তাই ওই মেয়ে এখনো সেখানেই আছে।
এ বিষয়ে বোরহানউদ্দিন থানার ওসি মো. সিদ্দিকুর রহমান জানান, এ ঘটনায় থানায় কেউ কোনো অভিযোগ দেননি। অভিযোগ পেলে প্রয়োজনীয় আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
লালমোহননিউজ/ -এইচপি