লালমোহনে সমূদ্রে মাছ ধরতে গিয়ে নিখোঁজ ১৩ জেলের সন্ধান মিলেছে ভারতে ২০ দিন পর ইমোতে ফোন

লালমোহনে সমূদ্রে মাছ ধরতে গিয়ে নিখোঁজ ১৩ জেলের সন্ধান মিলেছে ভারতে  ২০ দিন পর ইমোতে ফোন
লালমোহনে সমূদ্রে মাছ ধরতে গিয়ে নিখোঁজ ১৩ জেলের সন্ধান মিলেছে ভারতে ২০ দিন পর ইমোতে ফোন

লালমোহন ডেস্ক|| গভীর সাগরে মাছ শিকারে গিয়ে ২০ দিন নিখোঁজ থাকার পর ভোলার লালমোহনের ১৩ জেলের সন্ধান পাওয়া গেছে। সোমবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে নিখোঁজ জেলেদের মধ্যে থাকা বাকপ্রতিবন্ধী মোঃ সাব্বির ইমো এপস থেকে তার মা নাজমার কাছে হঠাৎ ফোন দেয়। এসময় সে কোন কিছু বুঝিয়ে না বলতে পারলেও নিজের চোখের সামনে ভার্চুয়ালী সন্তানকে দেখে আবেগঘন পরিবেশ সৃস্টি হয়। পরে তার ফোন দিয়ে এক এক করে অন্য ১২ জনও কথা বলেন পরিবারের সঙ্গে। তারা জানান, মাছ ধরতে গিয়ে গভীর সাগরে দিক হারিয়ে ভুল করে ভারতীয় সীমানায় চলে যান। সেখান থেকে ভারতীয় নৌ-পুলিশ তাদের ধরে নিয়ে গিয়ে নিকটবর্তী থানায় সোপর্দ করে। তবে তারা কোন থানায় রয়েছেন তা বলতে না পারলেও পশ্চিমবঙ্গের মধ্যেই আছেন বলে জানিয়েছেন। 
নিখোঁজ জেলেদের সন্ধান পাওয়ার খবর শুনে মঙ্গলসিকদার পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের ইনচার্জ মো. এরশাদ উকিল জেলেদের বাড়িতে আসেন। তিনি খোঁজ খবর নিয়ে উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের কাছে তথ্য প্রেরণ করেন। এবিষয়ে তিনি জানান, বর্তমানে জেলেদের ফিরিয়ে আনার জন্য পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে কাজ করা হবে। আশা করি খুব শীগগিরই তারা নিজেদের পরিবারের কাছে ফিরতে পারবে।  
গত ১১ নভেম্বর লালমোহন উপজেলার মেঘনা নদীর তীরবর্তী বাত্তিরখাল এলাকা থেকে ‘মা-বাবার দোয়া’ নামে একটি ফিশিংবোট নিয়ে ৫ দিনের প্রয়োজনীয় বাজারসহ ট্রলার মালিক মো. ফারুক মাঝির নেতৃত্বে ১৩ জন জেলে বঙ্গোপসাগরের উদ্দেশে যাত্রা করে। তারা চরফ্যাশনের সামরাজ ঘাটে গিয়ে থামেন। সেখান থেকে ট্রলারে বরফ নিয়ে ফের সাগরের উদ্দেশে রওনা হন তারা। পরের দিন থেকে পুরোপুরি যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে ট্রলারটি। এর পর থেকে তাদের আর কোন খোঁজ পায়নি পরিবার। পরিবারের সদস্যরা তাদের সাথে মোবাইল ফোনেও যোগযোগ করে বন্ধ পায়। নিখোঁজ জেলেরা হলেন- আছমত মাঝির ছেলে ট্রলার মালিক মো. ফারুক (৫৩), আব্দুল মালেকের ছেলে মো. জাহাঙ্গীর (৩৮), মো. নুরুল ইসলামের ছেলে মো. শামিম (২৩), মো. হানিফের ছেলে মো. খোকন (৩৫), মো. সবুজের ছেলে সজিব (২২), আছমত আলীর ছেলে মো. আলম (৪৬), মফিজুল হকের ছেলে হেলাল উদ্দিন (৪০), জয়নাল আবেদীন মোল্লার ছেলে মো. ফারুক (৪২), আবুল কাশেমের ছেলে মাকসুদুর রহমান (৪২), মো. ভুট্টুর ছেলে মো. ছাব্বির (২৫) ও মো. নাছির, আব্দুল মালেক ও মো. মাকসুদ। তারা সবাই লালমোহন উপজেলার ধলীগৌরনগর ইউনিয়নের ৮ ও ৯ নাম্বার ওয়ার্ডের কুলচড়া গ্রামের বাসিন্দা।
এদিকে জেলেদের নিখোঁজের পর তাদের পরিবারের সদস্যরা উদ্বিঘ্ন হয়ে পরেন। দিশেহারা হয়ে পরেন তারা। জেলেদের সন্ধানে মৎস্য বিভাগেরও উদাসীনতার দায়ে স্বজনরা ও এলাকাবাসী গত ২৫ নভেম্বর সড়ক অবরোধ ও বিক্ষোভ করে। পরে উপজেলা প্রশাসন ও নৌ-বাহিনী-পুলিশ ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে নিখোঁজ জেলেদের সন্ধান পেতে সকল ধরণের যোগাযোগ ও তাদের খোঁজ পেতে সর্বচ্চো প্রচেস্টা অব্যাহত থাকবে বলে পরিবারকে আশ্বস্থ করেন।