বোরহানউদ্দিনের জেলের জালে ফের ধরা পড়ল রাজ কাঁকড়া

বোরহানউদ্দিনের জেলের জালে ফের ধরা পড়ল রাজ কাঁকড়া
ছবি: লালমোহন নিউজ
জেএম.মমিন, বোরহানউদ্দিন থেকে: ভোলার মেঘনা নদীতে জেলের জালে ধরা পড়েছে একটি রাজ কাঁকড়া ৷ এটি দেখতে অনেকটা পানপাতা মাছের মতো ৷ শক্ত পিঠের উপরে চোখ, নিচের অংশে মুখ ও ছোট ছোট অনেক গুলো পা এবং পিছনে রয়েছে একটি সরু লেজ ৷
গত মঙ্গলবার (১৩ জুন) ভোলার চরফ্যাশন উপজেলার সামরাজ মাছ ঘাট এলাকায় মাছ ধরতে গিয়ে রাকিব মাঝি নামে এক মাঝির জালে ধরা পরে ৷ তার বাড়ী বোরহানউদ্দিন উপজেলার বাথান বাড়ী গ্রামে ৷ 
রাকিব মাঝি জানান, গত মঙ্গলবার চরফ্যাশনের মেঘনা নদীতে মাছ ধরতে গিয়ে জালে ধরা পরে এই রাজ কাঁকড়াটি। পরে নৌকায় তুলে একটি পাত্রে পানিতে রেখে দেয় ৷ সে আরও জানান, ‘এ ধরনের কাঁকড়া এর আগে কখনো দেখিনি। লোক মুখে শুনেছি এই কাঁকড়ার দাম কয়েক লাখ টাকা। তাই বিক্রির আশায় সামরাজ ঘাট থেকে বাড়ীতে আসার সময় পানির পাত্রে করে নিয়ে এসেছি এবং তাতেই রেখে দিয়েছি ৷ এটি এখন অনেকেই দেখতে আসছেন ৷ কাঁকড়াটির ওজন প্রায় ২০০ গ্রাম।
গবেষকদের মতে, এই কাঁকড়াটি হলো Horseshoe Crab লিমুলাস। এটি “রাজ কাঁকড়া” নামেও পরিচিত। এরা প্রধানত অগভীর সমুদ্র ও নরম বালি বা কাদা সমৃদ্ধ সমুদ্রতলে বাস করে। আজ থেকে ৪৫ কোটি বছর আগে বিবর্তিত হয়ে এতদিন প্রায় অবিকৃত চেহারায় থেকে যাওয়ার জন্য এদের জীবন্ত জীবাশ্ম হিসেবে গণ্য করা হয়। এদের রোগ-প্রতিরোধ ক্ষমতা উন্নত হওয়ায় অঙ্গসংস্থানিক পরিবর্তন ছাড়াই এরা পৃথিবীতে টিকে আছে।
রকারি আব্দুল জব্বার কলেজের প্রাণী বিজ্ঞান বিভাগের বিভাগীয় প্রধান নীল কমল পাল বলেন, এটিকে কাঁকড়া বলা হলেও প্রজাতিগত দিক থেকে মাকড়সার সঙ্গে বেশি মিল রয়েছে। এরা লিমুলিডি গোত্রের অন্তর্গত সামুদ্রিক সন্ধিপদী। এরা প্রধানত অগভীর সমুদ্র ও নরম বালি বা কাদা সমৃদ্ধ সমুদ্রতলে বাস করে।
এ বিষয়ে জেলা মৎস্য কর্মকর্তা মোল্লা এমদাদ উল্যাহ জানান, এই কাঁকড়াটির নাম লিমুলাস। এটি রাজ কাঁকড়া নামেও পরিচিত। এরা প্রধানত অগভীর সমুদ্র ও নরম বালু বা কাঁদা সমৃদ্ধ সমুদ্রতলে বাস করে। ডাঙায় সচরাচর পাওয়া যায়। এগুলোর দাম নিয়ে লোক মুখে যা শোনা যায় তা গুজব এর কোনো ভিত্তি নেই ৷
উল্লেখ্য, এর আগে গত ১৭ মে একই উপজেলার ফারুক মাঝি নামে জেলের জালে একটি কাকড়া ধরা পরে এবং ৬ দিন পর তা চুরি হয়ে যায় ৷ 
-এইচপি