ইউএনও শূন্য মনপুরায় ভোগান্তি

তিন মাস নেই ইউএনও

ইউএনও শূন্য মনপুরায় ভোগান্তি
ছবি: লালমোহন নিউজ

সীমান্ত হেলাল, মনপুরা থেকে: ভোলা জেলার বিচ্ছিন্ন দ্বীপ উপজেলা মনপুরায় তিন মাস ধরে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) পদটি শূন্য থাকায় চরম ভোগান্তিতে পড়েছে সাধারণ মানুষ। এ অবস্থায় ব্যাহত হচ্ছে দাপ্তরিক কার্যক্রম। গুরুত্বপূর্ণ প্রশাসনিক কর্মকান্ডে দেখা দিয়েছে স্থবিরতা। সঠিকভাবে তদারকি হচ্ছে না বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কর্মকান্ড। ইউএনও না থাকায় প্রতিনিয়ত বিপাকে পড়ছেন সেবা নিতে আসা জনগণ।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, এ উপজেলায় নির্বাহী কর্মকর্তা হিসেবে ছিলেন আশীষ কুমার দাস। বদলিজনিত কারণে গত ১৮ ফেব্রুয়ারি তিনি কর্মস্থল থেকে বিদায় নিয়ে অন্যত্র যোগদান করেন। তারপর থেকে তিন মাস অতিবাহিত হয়ে গেলেও এখন পর্যন্ত জনপ্রশাসন মন্ত্রনালয় থেকে কাউকে উক্ত পদে পদায়ন করা হয়নি।

এদিকে, ইউএনও হিসেবে কাউকে এ উপজেলায় পদায়ন না করায় দীর্ঘদিন যাবৎ সহকারী কমিশনার (ভূমি) পদটিও শূন্য রয়েছে। একাধারে জনগুরুত্বপূর্ণ পদ দুটি দীর্ঘদিন ধরে শূন্য থাকায় সেবা নিতে এসে প্রতিনিয়ত ফেরত যেতে হচ্ছে সাধারণ মানুষকে।

জানা যায়, উপজেলা নির্বাহী অফিসারের তত্ত্বাবধায়নে উপজেলায় ৩৪ টি দপ্তর রয়েছে। ইউএনও না থাকায় এসব দপ্তরের বিভিন্ন সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে মানুষ। তদারকি না থাকায় বেশিরভাগ দপ্তরের অফিস তালাবদ্ধ দেখা গেছে দিনের পর দিন। এতে ব্যাহত হচ্ছে এসব দপ্তরের কর্মকান্ড। এছাড়াও উপজেলার একাধিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সভাপতির দায়িত্বে রয়েছেন ইউএনও। পদটি শূন্য থাকায় ব্যাহত হচ্ছে এসব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের কার্যক্রম।

এদিকে, মনপুরায় উপজেলা নির্বাহী অফিসারের পদটিতে পদায়ন না থাকায় চরফ্যাশন উপজেলা নির্বাহী অফিসার আল-নোমান মনপুরার অতিরিক্ত দায়িত্বে রয়েছেন। মনপুরা উপজেলাটি নদীমাতৃক হওয়ায় চরফ্যাশন থেকে এসে দাপ্তরিক কাজ করা কষ্টসাধ্য হয়ে উঠেছে ওই ইউএনওর পক্ষে। তাছাড়া উপজেলার বিচ্ছিন্ন চরাঞ্চল থেকে মানুষ এসে সেবা না পেয়ে ফেরত যেতে হচ্ছে প্রতিদিন।

উপজেলার বিচ্ছিন্ন কলাতলির চর, কাজীর চর, ঢাল চর, চর সামসুদ্দিন থেকে আসা মাওলানা হেলাল উদ্দিন, সাহাবুদ্দিন, বারেক, আলাউদ্দিন, আলমগীর মেম্বার জানান, জরুরী কাজে এসে ইউএনও না থাকায় ফেরত যেতে হচ্ছে। এতে আমাদের অনেক দূর থেকে এসে প্রচুর খরচ ও সময় ব্যয় করেও কোনো কাজ হচ্ছে না।

জনসাধারণের ভোগান্তির কথা স্বীকার করে মনপুরায় অতিরিক্ত দায়িত্বে থাকা চরফ্যাশন উপজেলা নির্বাহী অফিসার আল-নোমান বলেন, দীর্ঘ তিন মাস যাবৎ মনুপরায় ইউএনও নেই। আমি চরফ্যাশন থেকে উত্তাল মেঘনা পাড়ি দিয়ে মনপুরায় গিয়ে কাজ করা সত্যি কষ্টসাধ্য। তাছাড়া আমি নিয়মিত না থাকায় মনপুরায় সেবা নিতে এসে মানুষকে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। তাই দ্রুত মনপুরায় ইউএনও পদায়ন করা জরুরী।

এ ব্যাপারে ভোলার জেলা প্রশাসক তৌফিক ই-ইলাহী চৌধুরী লালমোহন নিউজকে জানান, ইউএনওর অনুপস্থিতিতে জনসেবা ব্যাহত হচ্ছে সত্য। তবে মনপুরায় ইউএনও পদায়নের জন্য চেষ্টা ও তদবির চলমান রয়েছে। আশা করি দ্রুত সেখানে ইউএনও যোগ দিবেন।

লালমোহননিউজ/ -এইচপি