লালমোহনে পচা পানির দুর্গন্ধে অতিষ্ঠ পথচারী-ব্যবসায়ী, উদাসীন পৌর কর্তৃপক্ষ
ভোলার লালমোহন পৌরশহরের অন্তত ৪০টি ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানের সামনে গত এক মাস ধরে জমাট বেধে রয়েছে পানি। ওই পানি পচে এখন দুর্গন্ধ ছড়াচ্ছে। এতে করে পথচারী, ক্রেতা এবং বিক্রেতারা অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছেন। এই পানির পাশ দিয়ে নাক চেপে হাঁটতে হয়। এমন দুর্ভোগেও পানি সরানোর কোনো পদক্ষেপ নিচ্ছেন না পৌর কর্তৃপক্ষ।
সরেজমিনে দেখা গেছে, ভোলা-চরফ্যাশন আঞ্চলিক মহাসড়কের লালমোহন অংশের পৌরশহরের ভূমি অফিস থেকে চৌরাস্তার মোড় পর্যন্ত দক্ষিণ পাশের দোকানগুলোর সামনে দীর্ঘদিন জমাট বেধে থাকার কারণে পানিগুলো পচে গেছে। এই এলাকায় ব্যাংক, হোটেল, ডায়াগনস্টিক সেন্টার, ফার্মেসি, বেকারি এবং কয়েকটি পানের দোকান রয়েছে। এসব দোকানের মালিক এবং ক্রেতারা দোকানগুলোর সামনে থাকা পানির দুর্গন্ধে অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছেন। ভোলা-চরফ্যাশন আঞ্চলিক মহাসড়কের উন্নয়ন কাজের কারণে বাজারের পানি নিঃষ্কাশনের ড্রেন বন্ধ করে দেওয়া হয়। যার জন্যই মূলত এই এলাকার পানি অপসারণ বন্ধ হয়ে জমাট বেধে রয়েছে। আর জমাট বাধা ওইসব পানি পচে এখন দুর্গন্ধ ছড়াচ্ছে।
পচা পানির দুর্গন্ধে অতিষ্ঠ মুসলিম হোটেলের মালিক মো. হাসান জানান, দোকানের সামনে পানি জমাট বেধে চরম দুর্গন্ধের সৃষ্টি হচ্ছে। এজন্য আগের চেয়েও দোকানের ক্রেতা কমে গেছে। পৌর কর্তৃপক্ষকে জানানোর পরেও তারা কোনো উদ্যোগ নেয়নি। অথচ আমরা নিয়মিত পৌরসভার নির্ধারিত অর্থ দিচ্ছি। তবে পৌর কর্তৃপক্ষ আমাদের সেবায় চরম উদাসীন।
নিরব দে নামে মুনস্টার স্টার ফার্মেসির মালিক বলেন, দোকানের ক্যাশবক্সের সামনেই ড্রেন। ওই ড্রেনে পানি জমাট বেধে এখন পচে গেছে। এই পচা পানির দুর্গন্ধে রীতিমতো চরম দুর্ভোগে রয়েছি। অন্যদিকে এই পচা পানি এখন মশা-মাছির উৎপত্তিস্থলে পরিণত হয়েছে। এজন্য মশার কামড়েও টিকে থাকা যাচ্ছে না। পৌরসভার পক্ষ থেকেও মশা নিধনের জন্য কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না। অতি শিগগিরই জমাট বাধা এ পানি সরাতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নেওয়ার দাবি জানাচ্ছি।
পৌরশহরের মিতু বেকারির মালিক মো. মজিবুর রহমান জানান, ক্রেতাদের দোকানে আসা তো দূরের কথা সামনে দিয়ে হাঁটতে গেলেই নাক চেপে রাখতে হয়। এই পচা পানির দুর্গন্ধের কারণে দোকানের ক্রেতাও অনেকাংশে কমে গেছে। দুর্গন্ধ থেকে রক্ষা পেতে বাধ্য হয়ে নিজ উদ্যোগে প্রতিদিন পচা পানির ওপর বিলিসিন ছিটাচ্ছি। এছাড়া জমাট বাধা পানির নিচের অবস্থান বুঝতে না পেয়ে অনেকে এরমধ্যে পা দিয়ে দুর্ঘটনার শিকার হচ্ছেন। আশা করছি পথচারী, ক্রেতা এবং আমাদের মতো ব্যবসায়ীদের এই দুর্ভোগ লাঘবে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ দ্রুত সময়ের মধ্যে এগিয়ে আসবে।
এ বিষয়ে লালমোহন পৌরসভার পৌর নির্বাহী কর্মকর্তা (সচিব) মো. আরিফ হোসেন বলেন, শিগগিরই ওই এলাকা পরিদর্শন করে পানিগুলো সরানোর প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নেবো।