মনপুরায় বিশুদ্ধ পানির তীব্র সংকট

মনপুরায় বিশুদ্ধ পানির তীব্র সংকট
ছবি: লালমোহন নিউজ

স্টাফ রিপোর্টার, লালমোহননিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম: ভোলার বিচ্ছিন্ন উপকূল মনপুরা উপজেলায় গত তিন ধরে ভয়াবহ তান্ডব চালিয়েছে ঘূর্ণীঝড় রেমাল। এর তান্ডবে পুরো উপজেলা সহ বিচ্ছিন্ন ছোট-বড় ১০ টি চরাঞ্চলে ৫০ হাজারের অধিক বাসিন্দাদের মধ্যে ক্ষত চিহৃ রেখে গেছে। ওই সমস্ত এলাকায় মানুষ ঘর-বাড়ি হারিয়ে মানবেতর জীবন-যাপন করছে। 

এর মধ্যে জোয়ারের নোনা পানি নলকূপে প্রবেশ করায় খাওয়ার বিশুদ্ধ পানির সংকট চরম আকার ধারন করেছে। এছাড়াও জোয়ারে ভেসে নিয়ে গেছে আধা-কাঁচা টয়লেট। এর সংকটও চরম আকার ধারন করেছে বাসিন্দাদের মধ্যে। যত্রতত্র দায়সারাভাবে মানুষ প্রাকৃতিক কাজ সারছেন। এতে পরিবেশ দূষণ হচ্ছে।

উপজেলা থেকে বিচ্ছিন্ন নবগঠিত বেড়ীবাঁধহীন কলাতলী ইউনিয়নের অবস্থা চরমে। সেখানে ২০ হাজারের ওপরে মানুসের বসবাস। এছাড়াও চরশামসুদ্দিন, সোনারচর, চরবদনা, কাজিরচর ও ঢালচরে অবস্থাও নাজুক। এই সমস্ত এলাকায় বেড়ীবাঁধ না থাকায় ৬-৭ ফুট জোয়ারের পানিতে গত তিনদিন ধরে মানুষ পানিবন্দি অবস্থায় ছিল। জোয়ারের নোনা পানিতে প্রত্যেকটি নলকূল ব্যবহারের অযোগ্য হয়ে পড়েছে। পাশাপাশি নিরাপদ টয়লেট নেই বললে চলে।

বিচ্ছিন্ন কলাতলী ইউনিয়নের নবনির্বাচিত চেয়ারম্যান আলাউদ্দিন হাওলাদার, ঢালচরের কালাম, কাজিরচরের ইউপি সদস্য চরশামসুদ্দিন চরের বাসিন্দা আবু কালাম এই তথ্য নিশ্চিত করেন।

এদিকে উপজেলার হাজিরহাট ইউনিয়নের ৮ টি পয়েন্টে বেড়ীবাঁধ ভেঙ্গে পুরো ইউনিয়ন প্লাবিত হয়। এর পাশাপাশি ৪ নং দক্ষিণ সাকুচিয়া ইউনিয়নের ৪ টি পয়েন্টে বেড়ীবাঁধ ভেঙ্গে পুরো ইউনিয়ন প্লাবিত হয়। দুই হাজারের বেশি ঘর-বাড়ি ক্ষতিগস্থের পাশাপাশি জোয়ারের নোনা পানিতে দুই ইউনিয়নের বেশিরভাগ নলকূপে পানি ব্যবহারের অযোগ্য হয়ে পড়েছে। এর পাশাপাশি আধা-কাঁচা টয়লেট পানিতে ভেসে যাওয়ায় সবচেয়ে বিপদে পড়েছে বাসিন্দারা।

হাজিরহাট ইউনিয়নের সোনার চর গ্রামের বাসিন্দা সুর্বনা, দাসেরহাট গ্রামের বাসিন্দা কামাল, চরফৈজুদ্দিন গ্রামের বাসিন্দা মামুন সহ অনেকে জানান, নোনা পানিতে নলকূপ ব্যবহারে অযোগ্য হয়ে পড়ায় বিশুদ্ধ পানির চরম আকার ধারন করেছে। এছাড়াও আধা-কাঁচা টয়লেট ভেসে যাওয়ায় প্রাকৃতিক কাজ দিনের বেলায় না পেরে রাতে বেলায় করছেন। 

এই ব্যাপারে হাজিরহাট ইউনিয়নের চেয়ারম্যান নিজাম উদ্দিন হাওলাদার ও ৪ নং দক্ষিণ সাকুচিয়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান অলি উল্লা কাজল জানান, ঘরবাড়ি ভেঙ্গে সবশেষ। এখন বিশুদ্ধ খাবার পানি ও নিরাপদ টয়লেট চরম আকার ধারন করেছে।

এই ব্যাপারে মনপুরা উপজেলা জনস্বাস্থ্য প্রকৌশলী আশরাফ হোসেন জানান, নোনা পানিতে অযোগ্য হয়ে যাওয়া নলকূপের তালিকা করা হচ্ছে। এছাড়াও পানি বিশুদ্ধকরণ ট্যাবলেট বিতরণ করা হচ্ছে। নিরাপদ টয়লেটে ব্যবহারের উদ্যোগ গ্রহন করা হচ্ছে।

লালমোহননিউজ/ -এইচপি