সন্তানের সুশিক্ষায় পিতামাতার ভূমিকা অনস্বীকার্য। সন্তানসন্ততি পিতামাতার দর্পনস্বরূপ। পিতামাতা তাদের সাথে যে ব্যবহার করবেন, তাদের মধ্যেও সেই চারিত্রিক গুণাবলী বিকশিত হবে।
মহানবী (সা.) পিতামাতাদের উদ্দেশ্যে বলেছেন, ‘কোনো পিতা তার পুত্রকে উত্তম শিষ্টাচার অপেক্ষা অধিক শ্রেয় আর কোনো বস্তু দান করতে পারে না’ (তিরমিজি)। তাই পিতামাতার উচিত হবে সন্তানদের উত্তম শিক্ষায় শিক্ষিত করে গড়ে তোলা। হাদিসে উল্লেখ আছে, এক সাহাবী মহানবী (সা.)এর কাছে এসে বলেন ‘হে আল্লাহর রাসূল! সন্তানের ওপর পিতামাতার কি হক বা দাবি আছে? তিনি (সা.) বললেন, তারা উভয়েই তোমার বেহেশতও এবং দোযখও’ (ইবনে মাজাহ)।
সন্তান যে পরিবেশে বড় হবে তাই সে শিখবে। আল্লাহতায়ালা এ পৃথিবীতে ধনসম্পদ ও সন্তান-সন্তুতি দিয়ে থাকেন পরীক্ষা করার জন্য। অনেককে আল্লাহতায়ালা প্রচুর ধনসম্পদ দান করেন ঠিকই কিন্তু সেই ধনসম্পত্তির সঠিক ব্যবহার না করার ফলে দেখা যায় সে ধ্বংস হয়ে যায় আবার কাউকে সন্তান-সন্তুতি দেন ঠিকই কিন্তু তাদেরকে সঠিক শিক্ষায় শিক্ষিত না করার ফলে এই সন্তান তার জন্য গলার কাঁটা হয়ে দাঁড়ায়।
সন্তান-সন্তুতি যদি প্রকৃত নৈতিকগুণ সম্পন্ন না হয় তাহলে মাতাপিতার জন্য তা একটি আজাব ছাড়া কিছুই না। জীবনবিধান আল কোরআনের সূরা কাহাফের ৪৬ আয়াতে বলা হয়েছে, ‘ধনসম্পদ ও সন্তানসন্তুতি দুনিয়ার সৌন্দর্য। এ সন্তানসন্তুতি যদি আদর্শ চরিত্রের না হয় তাহলে তা হয় মাবাবার জন্য পরীক্ষার কারণ, দুঃখের বোঝা।’ আর এজন্যই আল্লাহতায়ালা কোরআন করিমে মুমিনদেরকে হুশিয়ার করে বলেছেন, ‘আর জেনে রাখ, তোমাদের ধনসম্পদ ও সন্তানসন্তুতি পরীক্ষার কারণ (সুরা আনফাল, আয়াত: ২৭)।
আরো বলা হয়েছে, ‘হে যারা ঈমান এনেছ! তোমরা নিজেদের এবং তোমাদের পরিবারবর্গকে আগুন থেকে বাঁচাও’ (সুরা তাহরিম, আয়াত: ৬)।
প্রতিদিন গণমাধ্যমে যে খবরটি নিয়মিত থাকেই তা হল চুরি, ডাকাতি, ধর্ষণ, হত্যা ইত্যাদি। গণমাধ্যমে এই খবরগুলো খুব ভালো করে স্থান দখল করে নিয়েছে। এমন কোনো দিন বাদ যায় না যে, যেদিন এসব খবর প্রকাশ না পায়। এসব অপকর্ম যারা করে তারাতো কোনো না কোনো পিতামাতারই সন্তান।
এছাড়া তারা কোনো না কোনো ধর্মের অবশ্যই অনুসারী। সে যে ধর্মেরই অনুসারী হোক না কেন, কোনো ধর্মেই এধরণের গর্হিত কাজকে অনুমতি দেয় না।
আমাদের সন্তানদের এত অবক্ষয় কেন? এর কারণ কি? সমাজে যারা নানান অপকর্মে লিপ্ত তাদের সম্পর্কে যদি আমরা একটু খোজ নেই, তাহলে দেখতে পাব যে, তাদের পিতামাতা আসলে তাদেরকে সেভাবে গাইড করেন নাই, যেভাবে করা উচিত ছিল।
সন্তানরা কোথায় যাচ্ছে, কাদের সাথে বন্ধুত্ব করছে এসবের কোনো খেয়ালই রাখা হয় না। সন্তানদের সম্পর্কে কোনো চিন্তা নাই বলেই তাদের মাধ্যমে আজ সংঘঠিত হচ্ছে যত ধরণের ঘৃণ্য কাজ। আমাদের সন্তান সম্পর্কে আমরা যদি সচেতন থাকি এবং উত্তম শিক্ষা প্রদান করি, তাহলে কোনো পিতামাতার সন্তানের পক্ষে কোনোভাবেই সম্ভব নয় কারো ক্ষতি করা।
আমরা যদি নেক সন্তান রেখে যেতে পারি, তাহলে দেশ ও জাতির জন্য তা যেমন কল্যাণকর হবে, তেমনই আমাদের মৃত্যুর পরও এ সন্তান আমাদের জন্য সদকায়ে জারিয়া হিসেবে থেকে যাবে। সন্তানসন্ততি আল্লাহতায়ালার দান। কোনো সন্তানই জন্ম থেকে খারাপ হয় না।
পারিপার্শ্বিক অবস্থা বা পিতামাতার অবহেলার কারণেই সন্তান মন্দ পথে পা বাড়ায়। আল্লাহতায়ালা আমাদের সন্তানদেরকে সঠিক ইসলামী শিক্ষা দিয়ে গড়ে তোলার তৌফিক দান করুন, আমিন। খবর: যুগান্তর
‘লালমোহনের ফুলবাগিচা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের এসএসসি পরীক্ষার্থীদের বিদায় সংবর্ধণা’
1689 Shares Share on Facebook Share on Twitter ভোলার লালমোহনের......বিস্তারিত