হাড়, মানব শরীরের সবচেয়ে মজবুত ও শক্তিশালী অঙ্গ। শারীরিক গঠন, আকৃতি, স্পর্শকাতর অঙ্গের সুরক্ষা, জোড়ার নড়াচড়া ও দৈনন্দিন জীবন ব্যবস্থায় হাড়ের অবদান অপরিসীম। হাড়ের মজ্জা রক্ত ও রক্তকণিকা তৈরি করে, ক্যালসিয়াম মজুদ করে এবং প্রয়োজনে সরবরাহ করে।
শরীরের ছোট বড় ২০৬টি হাড়ের প্রতিটিই কোলাজেন, শর্করা, আমিষ, পানি ও খনিজ লবণ দিয়ে তৈরি। ক্যালসিয়াম ও অন্যান্য খনিজ লবণ হাড়ের মজবুত গঠন এবং শক্তিমত্তা বৃদ্ধি করে। মানুষের জীবনের কোন না কোন সময় অন্তত একটি হাড় ভাঙ্গার প্রবণতা দেখা যায়। আগাত ছাড়াও বিভিন্ন রোগের কারণে হাড় ভাঙতে পারে।
হাড় ভেঙে গেলে অস্থি জোড়া লাগাতে আমরা কত দাওয়াই ব্যবহার করে থাকি। তবে প্রাকৃতিক উপায়ে ওষুধী গাছ দিয়েও কিন্তু এর চিকিৎসা করা সম্ভব। হাড় জোড়া লাগার জন্য সবচেয়ে উপযোগী হাড়জোড়া গাছ অত্যন্ত কার্যকরী।
১) হাড়জোড়া বা অস্তিসংহার হাড় ভাঙ্গায় অত্যন্ত কার্যকরি । এর ডাঁটা ও পাতা সমপরিমাণ রসুন ও গুগগুলু একসঙ্গে বেটে গরম করে ভাঙ্গাস্থানে প্রলেপ দিলে জুড়ে যাবে। প্রলেপটি ২/১ দিন পরপর পরিবর্তন করে লাগাতে হবে।
২) হাড়ভাঙ্গার ফোলা ও ব্যথা সারাতে সমপরিমাণ হাড়ভাঙ্গার ডাঁটা গন্ধবাদালি ও নিসিন্দার পাতার সঙ্গে অর্ধেক পরিমাণ ধুতুরার পাতা এক সাথে বেটে গরম করে প্রলেপ দিলে ব্যথা ও ফোলা দুই চলে যাবে।
৩ অনিয়মিত ঋতুস্রাবে অর্থাৎ মাসের দিনগুলি এগিয়ে পিছিয়ে গেলে কচি হাড়জোড়ার ডাঁটা কুচি কুটি করে কেটে শুকিয়ে সেই গুড়া ২টিপ পানিসহ দিনে ২বার কিছুদিন খেলে ওটা স্বাভাবিক হবে।
৪) উপর্যুক্ত গুড়া সকাল বিকাল ২বার খেলে শ্বাস রোগেরও উপশম হয়।
৫) কৃমির উপদ্রব হলে উপযুক্ত হাড়জোড়া চূর্ণ ঘিয়ে ভেজে পানিসহ ২/৩ টিপ দিনে ২বার খেলে এ অসুবিধা চলে যাবে।
৬) কানে পূঁজ হলে ৫০ গ্রাম সরিষার তেলে ২৫ গ্রাম হাড়জোড়ার ডাটা চাকা করে কেটে আলুভাজার মত ভেজে ঐ তেলের ২/১ ফোটা করে কানে দিলে ওটা সেরে যাবে।
৭) হাড়জোড়ার লতা ও পাতার এ্যালকোহলীয় নির্যাস উচ্চ রক্তচাপ রোধক রোধক ও মূত্রবর্ধক হিসেবে কাজ করে।
৮) কচি ডাটার ভস্ম বদহজম , পেট ফাপা ও অন্যান্য পেটের পীড়ায় ওষুধ হিসেবে ব্যবহৃত হয়।
পরিচিতি- হাড়জোড়া হাড়ভাঙ্গা নামেও পরিচিত তবে নামটি হাড়জোড় হওয়াই যুক্তিসমঙ্গত। এটি চারকোণ বিশিষ্ট সবুজ রসালো লতা। ৬-১১ সেন্টিমিটার লম্বা পর্ব পরপর জুড়ে শিকড়ে আকৃতি ধারন করে। প্রতিটি বা এর একপাশ হতে একটি পাতা এবং অন্য পাশে হতে একটি আকর্ষি গজায়। পাতা হৃদপিন্ডের মত, বোটাসহ লম্বা ৬-৭ সেন্টি মিটার ও চওড়া ৫-৬ সেন্টি,মিটার এবং ৩-৪ অংশে বিভক্ত। লতার শীর্ষ থেকে এক একটি পর্ব গুচ্ছাকারে লোমযুক্ত সাদা সাদা ফুল ধরে। পাকা ফল দেখতে লাল ও রাসালো এবং আকারে মটর দানার মত।
লেখক : ড. তপন কুমার দে
‘পদ্মা সেতুর নামে বিদেশী ছবি প্রচার হচ্ছে কেন?’
1889 Shares Share on Facebook Share on Twitter পদ্মা সেতু......বিস্তারিত