নিউজ ডেস্ক: মাদরাসা পরিচালনা কমিটির নির্বাচনে হেরে এক ইমামের মাথায় মলমূত্র ঢেলে লাঞ্ছিত করেছে পরাজিত জাপা নেতা জাহাঙ্গীর খন্দকার ও তার লোকজন। সেই সঙ্গে মলমূত্র ঢালার ওই দৃশ্যটি ভিডিও করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ছেড়ে দেয় তারা। এ ঘটনায় দেশজুড়ে তোলপাড় শুরু হয়েছে। পুলিশ আসামিদের গ্রেপ্তারে মাঠে নেমেছে। এ পর্যন্ত তিনজনকে আটক করেছে। এরা হচ্ছে বাদল (২৫)।
সে বাকেরগঞ্জ পৌরসভার ৭ নম্বর ওয়ার্ডের নূর মোহাম্মদের ছেলে। সোহাগ বাকেরগঞ্জ উপজেলার রাজাপুর এলাকার বাসিন্দা আ. মজিদ সরদারের ছেলে। ১২ নম্বর রঙ্গশ্রী ইউনিয়নের কাঠালিয়া গ্রামের মৃত মো. হাসেম মুসল্লির ছেলে মিনজু (৪৫)। গতকাল দুপুরে বরিশাল জেলার পুলিশ সুপার (এসপি) মো. সাইফুল ইসলাম সাংবাদিকদের জানান, ঘটনার সঙ্গে জড়িত ১০-১২ জন। এদের সকলকে গ্রেপ্তারে সর্বাত্মক চেষ্টা চলছে। এদিকে দুর্বৃত্তদের বিচারের দাবিতে বুধবার (১৬ই মে) মানববন্ধন কর্মসূচির ডাক দিয়েছে স্থানীয় আলেম সমাজ। গতকাল দুপুরে বরিশাল জেলার পুলিশ সুপার (এসপি) মো. সাইফুল ইসলাম বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
বরিশালে বাকেরগঞ্জ উপজেলার রঙ্গশ্রী ইউনিয়নে ন্যক্কারজনক ঘটনার শিকার লাঞ্ছিত ইমাম আবু হানিফা (৫০) কাঁঠালিয়া ইসলামিয়া দারুস সুন্নাহ দাখিল মাদরাসার সুপার ও নেছারবাগ বায়তুল আমান জামে মসজিদের ইমাম।
অভিযুক্তরা হলো- পরাজিত প্রার্থী জাহাঙ্গীর আলম খন্দকার, সহযোগী জাকির হোসেন জাকারিয়া, মো. মাসুম সরদার, মো. এনামুল হাওলাদার, মো. রেজাউল খান, মো. মিনজু, সোহেল খন্দকার ও মিরাজ হোসেন। অভিযুক্ত সবার বাড়ি কাঁঠালিয়ায়।
ইমাম আবু হানিফা ও স্থানীয়রা জানান, গত ফেব্রুয়ারি মাসে কাঁঠালিয়া ইসলামিয়া দারুস সুন্নাহ দাখিল মাদরাসা পরিচালনা কমিটির নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। নির্বাচনে সভাপতি পদে প্রার্থী হন এইচ এম মজিবর ও জাহাঙ্গীর খন্দকার।
এই নির্বাচনে ইমাম আবু হানিফা সভাপতি প্রার্থী এইচ এম মজিবর রহমানের পক্ষ নেন। নির্বাচনে বিজয়ী হন এইচ এম মজিবর রহমান। পাশাপাশি সভাপতি প্রার্থী জাহাঙ্গীর খন্দকার হেরে যায়। এ নিয়ে আবু হানিফার সঙ্গে জাহাঙ্গীর খন্দকারের দ্বন্দ্ব শুরু হয়।
পাশাপাশি বিভিন্ন সময় ইমাম আবু হানিফাকে হুমকি-ধামকি দিয়ে আসছিল পরাজিত প্রার্থী জাহাঙ্গীর খন্দকার ও তার সহযোগীরা। গত শুক্রবার ফজরের নামাজের পর আবু হানিফা মসজিদ থেকে বের হলে তার পথরোধ করে পরাজিত প্রার্থী ও তার লোকজন।
এ নিয়ে ইমামের সঙ্গে তাদের কথা কাটাকাটি হয়। একপর্যায়ে পরাজিত প্রার্থী জাহাঙ্গীর খন্দকারের এক সহযোগী ইমাম আবু হানিফার হাত ধরে ফেলে। পাশাপাশি জাহাঙ্গীর খন্দকার ইমামকে ধরে রাখে। এ সময় তার আরেক সহযোগী হাঁড়ি ভর্তি মলমূত্র এনে ইমাম আবু হানিফার মাথায় ঢেলে দেয়। এতে উল্লাসে ফেটে পড়ে। পরে দৃশ্যটি ভিডিও করে ফেসবুকে ছেড়ে দেয় তারা।
এ বিষয়ে রঙ্গশ্রী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান বশির উদ্দিন বলেন, বিষয়টি শুনেছি এবং দেখেছি। যতই বিরোধিতা থাকুক সমাজের একজন সম্মানিত ইমামকে এভাবে কেউ অপমানিত করতে পারে ভাবতেও ঘৃণা লাগে। বিষয়টি দেখে খুবই কষ্ট পেয়েছি। এ ঘটনায় জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি করছি।
বাকেরগঞ্জ থানা পুলিশের পরিদর্শক (তদন্ত) আবদুল হক জানান, মাদরাসার সুপার আবু হানিফা থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। আসামিদের ধরতে পুলিশের অভিযান চলছে।
পুলিশ সুপার জানান, তিনি ঘটনাটি জানতে পেরেই দ্রুত বাকেরগঞ্জ থানাকে নির্দেশ দেন আসামিদের ধরতে। সেই সঙ্গে তিনি বাদী ও তার ভাইয়ের সঙ্গে নিজে কথা বলেন। এরপর ১৩ জনকে আসামি করে মামলা দায়ের করা হয়। পুলিশ সুপারের নির্দেশ পেয়েই স্থানীয় পুলিশ দুইজনকে আটক করে। অপর আসামিদের যে কোনো মুহূর্তে ধরা হবে বলে পুলিশ সুপার সাইফুল ইসলাম জানান। তিনি বলে এটি ধিক্কারযোগ্য একটি ঘটনা। মাদরাসা সুপারের মাথায় মানুষের মল ঢেলে লাঞ্ছিত করার ঘটনা খুবই দুঃখজনক। খবরটি জানার পর থেকেই ঘটনার সঙ্গে জড়িত ও মামলায় অভিযুক্ত সবাইকে আটক করতে অভিযান অব্যাহত রয়েছে। যে ভিডিওটি ফেসবুকে ভাইরাল হয়েছে সেই ভিডিও চিত্রের বাইরে পুরো ঘটনার সঙ্গে ১০ থেকে ১২ জন জড়িত। এ ঘটনায় কাউকে ছাড় দেয়া হবে না। আটককৃতদের আদালতে সোপর্দ করে রিমান্ড চাওয়া হবে। অন্যদের দ্রুত আটক করে আইনের আওতায় আনা হবে বলেও জানান এসপি সাইফুল।
‘ভারতে প্রতি চার সেকেন্ডে ১ জন আক্রান্ত’
ভয়াবহ কোভিড ঝড় বয়ে যাচ্ছে ভারতের ওপর দিয়ে। গত বুধবার......বিস্তারিত