একে অপরকে জড়িয়ে ধরে শেষ বিদায় নেন প্রেমিক-প্রেমিকা
গাজীপুর মহানগরীর দক্ষিণ ছয়দানার হাজির পুকুর এলাকার একটি বসতঘর থেকে বুকে জড়িয়ে ধরা অবস্থায় তরুণ-তরুণীর মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। পুলিশের ধারণা দুজনই বিদ্যুতের তার জড়িয়ে আত্মহত্যা করেছেন।
মঙ্গলবার সকালে ওই এলাকার বিল্লাল মিয়ার ভাড়া বাড়ির একটি কক্ষ থেকে বুকে জড়িয়ে ধরা অবস্থায় থাকা লাশ দুইটি উদ্ধার করে পুলিশ।
মৃতরা হলেন- সিরাজগঞ্জের রায়গঞ্জ থানার সিমলা গ্রামের বাবুল শেখের ছেলে মোহাম্মদ বিল্লাল শেখ (২৭) ও গাইবান্ধা জেলার গোবিন্দগঞ্জ থানার বীরপুরন্দ গ্রামের আব্দুল জব্বারের মেয়ে শ্যামলী আক্তার (২৫)।
গাজীপুর মহানগরের ছয়দানা এলাকার আক্তার মিয়ার বাড়িতে ভাড়া থেকে দর্জির কাজ করতেন বিল্লাল শেখ। ওই বাড়ির পাশেই বিল্লাল মিয়ার বাড়িতে ভাড়া থেকে প্রীতি সোয়েটার লিমিটেড নামের একটি পোশাক তৈরি কারখানায় কাজ করতেন শ্যামলী আক্তার। দীর্ঘদিন ধরে শ্যামলী ও বিল্লাল শেখের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক চলছিল। বিল্লাল শেখ গত সোমবার দিবাগত রাতের কোনো এক সময়ে শ্যামলীর ভাড়া কক্ষে যান।
মঙ্গলবার ভোর ৬টার দিকে পাশের কক্ষের ভাড়াটিয়া জুয়েল মিয়া পাশে থাকা শ্যামলীর রুমের দরজা আংশিক খোলা দেখতে পেয়ে দরজায় ধাক্কা দেন। এ সময় তাদের একে-অন্যের সঙ্গে জড়ানো এবং গলায় ও হাতে বৈদ্যুতিক তার পেঁচানো অবস্থায় দেখতে পেয়ে ডাক চিৎকার শুরু করেন। পরে আশপাশের অন্য ভাড়াটিয়ারা ছুটে এসে তাদের লাশ দেখতে পেয়ে পুলিশকে খবর দেন। খবর পেয়ে পুলিশ তাদের লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য গাজীপুর শহিদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গে পাঠিয়েছে।
গাছা থানার এসআই সুমন মিয়া স্থানীয়দের বরাত দিয়ে বলেন, মৃত শ্যামলীর স্বামী ও সন্তান আছে। সম্প্রতি তাদের মধ্যে বিবাহ বিচ্ছেদের ঘটনা ঘটে। বর্তমানে তিনি গাজীপুরের ছয়দানা এলাকার একটি পোশাক তৈরি কারখানায় চাকরি করেন। ১ সেপ্টেম্বর থেকে স্থানীয় বিল্লালের বাড়িতে বাসা ভাড়া নেন। সেখানে চাকরি করার সুবাদে দর্জি মোহাম্মদ বিল্লাল শেখের সঙ্গে তার পরিচয় হয়। ধারণা করা হচ্ছে তাদের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠেছিল। কারণ প্রেমের সম্পর্ক না থাকলে কোন মেয়ের ঘরে একজন ছেলে যেতে পারেন না।
তিনি আরও জানান, ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখেন রান্না ঘরের বিদ্যুতের লাইন থেকে অতিরিক্ত একটা তারের মাধ্যমে লাইন নিয়ে মেয়ের বাম হাত ও ছেলের ডান হাতে তার পেঁচিয়ে বুকে জড়িয়ে আত্মহত্যা করেছেন। বিদ্যুৎস্পৃষ্ট ছাড়া তাদের শরীরে আর কোনো আঘাতের চিহ্ন পাওয়া যায়নি। এ ঘটনায় থানায় একটি অপমৃত্যু মামলা দায়ের করা হয়েছে।
লালমোহননিউজ/ -এইচপি