তজুমদ্দিন প্রতিনিধিঃ ভোলার তজুমদ্দিনে শালিস বৈঠকে জুতাপেটা করার কারনে লোকলজ্জায় গৃহবধুর বিষপানে আত্মহত্যা চেষ্টার ঘটনায় উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান (মহিলা) ফাতেমা বেগম সাজুসহ ছয় সালিশকারীর বিরুদ্ধে থানায় মামলা দায়ের করা হয়েছে। ঘটনার শিকার গৃহবধুর মা বিবি ফাতেমার মামলায় পুলিশ রবিবার গভীর রাতে অভিযান চালিয়ে চার আসামীকে আটক করে জেল হাজতে প্রেরণ করেছে। গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন, মোঃ মুকবুল হোসেন, হানিফ দালাল, রেহানা বেগম ও ফরিদ। তবে, গ্রেপ্তার এড়াতে মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান ফাতেমা বেগম ও প্রাক্তন ইউপি সদস্য সিরাজুল হক পালাতক রয়েছেন।
মামলার এজহার সুত্রে জানা যায়, উপজেলার চাঁদপুর ইউনিনের মাওলানা কান্দি গ্রামের রবিউলের ছেলে রিয়াজের সাথে চার বছর আগে বিয়ে হয় একই গ্রামের সেলামতের মেয়ে সীমা বেগম সাথীর। গত ২৩ মার্চ রাত ১১ টার সময় সাথীর স্বামী রিয়াজ বাসায় না থাকার সুযোগে তার চাচাতো ভাই ফরিদ ঘরে প্রবেশ করে। এসময় স্থানীয়রা টের পেয়ে ফরিদকে আটক করেন। তখন স্থানীয় আ’লীগ নেতা মোঃ হানিফ ওরফে হানু দালাল ফরিদকে চড় থাপ্পর দিয়ে চেড়ে দেন। এরপর সাথীর স্বামীসহ পরিবারের লোকজন পরদিন এবিষয়ে অভিযোগ করার জন্য থানায় যায়। এসময় উপজেলা
মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান তাদেরকে মামলা করতে না দিয়ে বিষয়টি সালিশের মাধ্যমে মিমাংশার কথা বলে বাড়িতে পাঠিয়ে দেয়। পরে গত ৩১ মার্চ মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান ফাতেমা বেগমের সভাপতিত্বে ওই ওয়ার্ডের প্রাক্তন ইউপি সদস্য সিরাজুল হকসহ কয়েকজনসহ চাঁদপুর ইউনিয়নের ৫ নং ওয়ার্ডের মাওলানাকান্দি গ্রামে হানিফ দালালের বাড়ির উঠানে সালিশ বৈঠকে বসেন। সালিশে উল্টো সাথীর বিরুদ্ধে তার দেবর ফরিদের সাথে পরকীয়ার অভিযোগ আনা হয়। এসময় দুই শতাধীক গ্রামবাসীর উপস্থিতিতে সাথীকে টেনে হিচড়ে শ্লীলতাহানী ও ২০ ঘা করে জুতা পেটা করার নির্দেশ দেন তারা।
পরে স্থানীয় নেত্রী রেহানা বেগম নির্দেশ মোতাবেক সাথীকে ১৪ ঘাঁ এবং মুকবুল হোসেন ফরিদকে ১৮ ঘাঁ জুতার বাড়ি দেয়। এরপর শালিস বৈঠকে উপস্থিত নেতৃবৃন্দ সাথীকে বিষ পানে আত্মহত্যার প্ররচণা ও প্রাণনাশের হুমকি দেয় বলে মামলার এজাহারে দাবী করা হয়েছে। এঘটনার পরপরই সন্ধ্যা ৬ টার দিকে সাথী ঘরে গিয়ে লোকলজ্জায় বিষপাণ করে । পরে স্বামী রিয়াজ ছটফট করতে দেখে সাথীকে দ্রæত তজুমদ্দিন হাসপাতালে নিয়ে গেলে আশঙ্কাজনক অবস্থায় কর্তব্যরত ডাক্তার তাকে ভোলা সদর হাসপাতালে রেফার করেন।
এঘটনায় সাথীর মা বিবি ফাতেমা উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান ফাতেমা বেগম, প্রাক্তন ইউপি সদস্য সিরাজুল হক, মোঃ মুকবুল হোসেন, হানিফ দালাল, রেহানা বেগম ও ফরিদকে আসামী করে থানায় মামলা দায়ের করেন। পরে পুলিশ রবিবার গভীর রাতে বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে মামলার চার আসামীকে আটক করে জেল হাজতে প্রেরণ করলেও গ্রেপ্তার এড়াতে মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান ফাতেমা বেগম সাজু ও প্রাক্তন ইউপি সদস্য সিরাজুল হক পালাতক রয়েছেন।
এ ব্যাপারে ওসি মোঃ ফারুক আহম্মেদ লালমোহননিউজ টোয়ান্টিফোর ডটকমকে জানান, পালাতক দুই আসামীকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।
হাসান পিন্টু
‘মনপুরায় করোনা ভাইরাসের টিকা নিয়েছেন ইউএনও’
মো: ছালাহউদ্দিন,মনপুরা (ভোলা) সংবাদদাতা: ভোলার বিচ্ছিন্ন দ্বীপ মনপুরা উপজেলা স্বাস্থ্য......বিস্তারিত