লালমোহননিউজ টোয়ান্টিফোর ডটকম: শেষ পর্যন্ত ডিজিটাল দখলবাজি মোকাবিলায় সাইবার প্রতিরোধ গ্রুপ করেছে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ। শত শত নেতাকর্মী এই গ্রুপে যুক্ত হয়ে গুজব সৃষ্টিকারীদের ভালোই জবাব দিচ্ছেন। কিন্তু জামায়াত-শিবিরের ডিজিটাল দখলবাজির প্রায় একযুগ পর সাইবার সন্ত্রাস মোকাবিলায় প্রতিরোধ গ্রুপ করায় ছাত্রলীগকে ধন্যবাদ দিচ্ছি। কারণ ডিজিটাল সন্ত্রাসের চরম মুহূর্তে ছাত্রলীগের নেতাদের বোধোদয় হয়েছে। আর একটু শক্ত করে যদি বলি, তাহলে বলতে হচ্ছে ছাত্রলীগ বাধ্য হয়েই সাইবার সন্ত্রাস প্রতিরোধে মাঠে নেমেছে।
বিড়াল যেমন ঠেলায় পড়ে জীবন বাচাঁতে মান্দাল গাছে ওঠে (এক ধরনের কাটাযুক্ত গাছ), তেমনই নিরুপায় হয়ে এতদিন পর ছাত্রলীগও সক্রিয় হয়ে উঠেছে। প্রতিরোধ গ্রুপ করেছে তারা। কারণ স্বাধীনতাবিরোধী এবং জামায়াত শিবিরের কর্মী-সমর্থকরা ডিজিটাল দখলবাজির মাধ্যমে এমন পর্যায়ে গিয়েছিল যে তারা সরকারের ভীত নাড়িয়ে দিচ্ছিল মিথ্যা গুজব ছড়িয়ে।
২০০৮ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর ছাত্রলীগ নেতাদের অনেকেই নিজেরা উপার্জনে ব্যস্ত হয়ে পড়েন। টাকার নেশায় ছুটাছুটি করে কেউ কেউ টাকার পাহাড় বানান। তবে গুটিকয়েক ছাত্রলীগ নেতা ছাড়া অনেকেই আঙ্গুলফুলে কলাগাছ হয়েছেন। শুধু কি তাই? থানা এবং ওয়ার্ড পর্যায়ের নেতারাও ব্যস্ত থাকেন উপার্জনের ধান্দায়। কিন্তু সেই সুযোগে ক্ষমতায় না থেকেও ধীরে ধীরে জামায়াত শিবিরের কর্মীবাহিনী ও তাদের সহযোগীরা ডিজিটাল ক্ষেত্রগুলো দখলে নিয়ে নেয়। বিভিন্ন গ্রুপ করে সরকারের বিরুদ্ধে একের পর এক মিথ্যাচার করতেই থাকে। বিভিন্ন সেক্টরে তৃণমূল পর্যায় থেকে শুরু করে সারাদেশেই সরকার হাজার হাজার কোটি টাকার উন্নয়ন করলেও তা কোনো আলো দিচ্ছে না সরকারকে। ভোটের মাঠে নৌকার পক্ষে জোয়ার সৃষ্টি হবে দূরের কথা, উল্টো সরকারের বিরুদ্ধে জনমত সৃষ্টি করছে। উন্নয়নকে ধুলিসাৎ করে দিচ্ছে মিথ্যাচার আর গুজব।
ফেসবুক ইউটিউব থেকে শুরু করে বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে শত শত গ্রুপ করে চলতে থাকে স্বাধীনতাবিরোধীদের বিভিন্ন কর্মকাণ্ড। তারা কোটি টাকা বিনিয়োগ করে সরকারের বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালাচ্ছে। ২০১৩ সালে হেফাজতে ইসলামীর সেইসব ঘটনার পর তা ভয়ংকরভাবে টের পেল সরকার।
জামায়াত শিবিরের ডিজিটাল মিথ্যাচারের কারণে আজও অনেকেই মনে করেন, মতিঝিলের ঘটনায় শত শত আলেম ওলামাকে গুম করা হয়েছিল। কিন্তু গুমের একটি প্রমাণ আজও দেখাতে না পারলেও তৃণমূলের মাঠ পর্যায়ে সরকারের যা ক্ষতি করার সেটা করেছিল। এভাবে একের পর এক প্রপাগান্ডার সঙ্গে কোনভাবেই পেরে উঠছে না সরকার সমর্থকরা। এইসব সাইবার সন্ত্রাস প্রতিরোধে ছাত্রলীগের মতো একটি ঐতিহ্যবাহী সংগঠনও শক্তভাবে মাঠে নামেনি। ফলে সেই সরকারবিরোধীদের প্রপাগান্ডাকেই তৃণমূল পর্যায়ের সাধারণ মানুষ বিশ্বাস করছেন এবং মিথ্যা তথ্যকেই সত্য হিসেবে মেনে নিচ্ছেন।
সরকারবিরোধীদের ধারাবাহিকতা মিথ্যাচারের একটি নমুনা দেখতে পেল সাধারণ শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের সময়। কোটা সংস্কার নিয়ে সাধারণ শিক্ষার্থীদের শান্তিপূর্ণ আন্দোলনকে গুজব ছড়ানোর মাধ্যমে সহিংস করে তোলা হয়। মিথ্যা এবং গুজবের কাছে যেন ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা অসহায় হয়ে পড়েন। গুজবের কারণে হুজুগে পড়ে তাণ্ডব চালানো হয় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসির বাসভবন। গলায় জুতার মালা পরানো হয় ছাত্রলীগের নেত্রী ইশাকে। সরকার প্রধান ও বঙ্গবন্ধুর কন্যা শেখ হাসিনার সিদ্ধান্তে সব চক্রান্ত এবং গুজব নস্যাৎ করে দেন তিনি।
এসব গুজব আর সাইবার সন্ত্রাস মোকাবিলায় ভাবতে শুরু করে ছাত্রলীগ। গঠন করে ছাত্রলীগের সাইবার প্রতিরোধ গ্রুপ। যা একযুগ আগে থেকেই জামায়াত শিবির চক্র সুসংগঠিত হয়েই এসব কর্মকাণ্ড চালিয়ে আসছে। তবে শেষ পর্যন্ত ২০১৮ সালে ছাত্রলীগ সাইবার সন্ত্রাস মোকাবিলায় একটি গ্রুপ গঠন করেছে। মোটামুটি ভালোই জবাব দেওয়া শুরু করেছে তারা। কোটা সংস্কার নিয়ে মিথ্যাচারে সামিল হওয়া অনেকের প্রোফাইলে প্রধানমন্ত্রীর ছবিও শোভা পাচ্ছে। অনেকেই নিজের ফেসবুকে করা মন্তব্য ডিলিট করে আওয়ামী লীগ সাজার ভান করছে। কিন্তু ১২ বছর আগে শিবির ও তাদের সমর্থকরা যে সাইবার গ্রুপ গঠন করেছে, ছাত্রলীগের মতো এমন বড় সংগঠনের এতো সময় লাগলো কেন? ছাত্রলীগ কেন এতো পিছিয়ে?
লেখক: হায়দার আলী, সাংবাদিক
‘পদ্মা সেতুর নামে বিদেশী ছবি প্রচার হচ্ছে কেন?’
1889 Shares Share on Facebook Share on Twitter পদ্মা সেতু......বিস্তারিত