সৌদি জোটের হামলায় কয়েক বছর ধরে ইয়েমেনের অর্থনীতি তীব্র সংকটের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। দেশটিতে শিয়া হুতি ও সুন্নিদের মধ্যকার বিভেদ বড় আকার নিয়েছে। ইরান হুতিদের মদদ দেয়। বিপরীতে পছন্দের সুন্নি সরকার রুখতে হামলা শুরু করে সৌদি আরবের নেতৃত্বাধীন জোট।
এতে কোনো পক্ষই বিজয় অর্জনের অবস্থানে যেতে না পারলেও বিশাল ক্ষতি হয়েছে ইয়েমেনের অর্থনীতির। এ কারণে দীর্ঘমেয়াদি দুর্ভিক্ষের আশঙ্কা প্রকাশ করেছে জাতিসংঘ।
সে যুদ্ধে দেশটির খাদ্য সঙ্কট কোন পর্যায়ে গিয়ে পৌঁছেছে তার একটি নজির সামনে এসেছে সম্প্রতি। রাজধানী সানার একটি হাসপাতালে ৭ বছর বয়সী এক বালককে ভর্তি করা হয়েছে, ‘যার ওজন মাত্র ৭ কেজি’।
যুদ্ধবিধ্বস্ত আরব রাষ্ট্রটিকে জাতিসংঘ সহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থাও বিশ্বের সবচেয়ে মানবিক সঙ্কটপূর্ণ দেশ হিসেবে আখ্যা দিয়েছে। বিশেষ করে করোনাকালীন সময়ে সেখানকার পরিস্থিতি একেবারেই নাজুক অবস্থায় পৌঁছেছে। এই অবস্থায় জাতিসংঘ বিশ্বের বিত্তবানদের দেশটির পাশে দাঁড়ানোর আহ্বান জানিয়েছে।
বার্তা সংস্থা রয়টার্স এক প্রতিবেদনে জানায়, ৭ কেজি ওজনের বালকটির নাম ফায়িদ সামিম। সে মারাত্মকভাবে অপুষ্টির শিকার ও পক্ষাঘাতগ্রস্ত হয়ে রাজধানী সানার আল সাবীন হাসপাতালের বিছানায় কুঁকড়ে শুয়ে আছে, তাকে রবিবার (৩ জানুয়ারি) এখানে ভর্তি করা হয়েছে।
হাসপাতালটির অপুষ্টি ওয়ার্ডের তত্ত্বাবধায়ক চিকিৎসক রাজে মোহাম্মদ বলেন, “যখন তাকে আনা হয় তখন তার প্রায় শেষ অবস্থা, কিন্তু খোদাকে ধন্যবাদ যা করার প্রয়োজন ছিল, আমরা তা করতে পেরেছি আর তার শারীরিক অবস্থারও উন্নতি হচ্ছে। সে সেরিব্রাল প্যালসি (সিপি) ও মারাত্মক অপুষ্টিতে ভুগছে।”
হাসপাতালে ভর্তি ফায়িদের ওজন মাত্র সাত কেজি। অবস্থা এমন যে তার ভঙ্গুর ছোট দেহটি হাসপাতালের ভাঁজ করা কম্বলের এক-চতুর্থাংশ দিয়েই ঢেকে দেওয়া যাচ্ছে। সানা থেকে ১৭০ কিলোমিটার উত্তরের আল জাওফ থেকে তাকে নিয়ে এসেছে তার পরিবার। পথে আসার সময় অনেকগুলো চেকপয়েন্ট ও ক্ষতিগ্রস্ত রাস্তা পাড়ি দিতে হয়েছে তাদের।
ফায়িদের পরিবারের চিকিৎসা ও ওষুধের খরচ বহনের সামর্থ্য না থাকায় তার চিকিৎসার জন্য অনুদানের ওপর নির্ভর করতে হচ্ছে। এ ধরনের অপুষ্টিজনিত ঘটনা দিনদিন বাড়ছে আর দরিদ্র অভিভাবকরা তাদের সন্তানদের চিকিৎসার জন্য অপরিচিতদের দয়ার ওপর বা আন্তর্জাতিক ত্রাণের ওপর নির্ভর করতে বাধ্য হচ্ছেন বলে জানিয়েছেন মোহাম্মদ।
সৌদি কতৃক চাপিয়ে দেওয়া যুদ্ধের কারণে ইয়েমেনের জনসংখ্যার ৮০ শতাংশ ত্রাণের ওপর নির্ভরশীল হতে বাধ্য হয়েছেন। জাতিসংঘ এই পরিস্থিতিকে বিশ্বের সবচেয়ে বড় মানবিক সংকট বলে অভিহিত করছে। এরপরও সরকারিভাবে ইয়েমেনে দুর্ভিক্ষ পরিস্থিতি ঘোষণা করা হয়নি।
২০১৮-র শেষ দিকে জাতিসংঘের আসন্ন দুর্ভিক্ষের হুঁশিয়ারির কারণে দেশটিতে ত্রাণ প্রবাহ বৃদ্ধি পেয়েছিল। কিন্তু করোনাভাইরাস বিধিনিষেধ, রেমিট্যান্স কমে যাওয়া, পঙ্গপাল, বন্যা ও তহবিল অপ্রতুলতার কারণে ২০২০ এ ত্রাণ প্রবাহ হ্রাস পাওয়ায় খাদ্য সমস্যা উদ্বেগজনক আকার ধারণ করেছে।
‘ঘর ছেড়ে পালিয়েছেন ৪ যুবকের সঙ্গে, লটারির মাধ্যমে পাত্র বেছে নিলেন তরুণী’
Jasim Jany: ভাগ্য করে বউ পাওয়া যায়— এ কথা হয়তো শুনেছেন। কিন্তু......বিস্তারিত