নিউজ ডেস্কঃ নানা উদ্যোগেও বন্ধ হচ্ছে না প্রশ্ন ফাঁস। এবারের এসএসসিতে এখন পর্যন্ত অনুষ্ঠিত প্রায় সব বিষয়ের পরীক্ষার আগেই প্রশ্ন ফাঁসের খবর এসেছে। এ থেকে উত্তরণে আগামী বছর থেকে পরীক্ষা পদ্ধতিতেই পরিবর্তন আনার ইঙ্গিত দিয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়।
জানা গেছে, আগামীতে ছাপানো প্রশ্নপত্রে আর পরীক্ষা না নেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। মুদ্রিত প্রশ্নপত্রের বদলে প্রতিটি স্তরের প্রতিটি বিষয়ের পরীক্ষার জন্য ‘প্রশ্নব্যাংক’ তৈরি করা হবে।
বিশেষ একটি ইলেকট্রনিক ডিভাইস ব্যবহার করে র্যানডম সিলেকশনের মাধ্যমে পরীক্ষার দিন সকালে চূড়ান্ত প্রশ্নপত্র তৈরি করা হবে। এরপর পরীক্ষা শুরুর আধঘণ্টা আগে সকাল সাড়ে ৯টায় আগে ওই ডিভাইস ব্যবহার করে কেন্দ্র সচিবদের প্রশ্ন জানিয়ে দেওয়া হবে। তিনি পরীক্ষা কক্ষের বোর্ডে তা লিখে জানিয়ে দেবেন। এর পর পরীক্ষা নেওয়া হবে। আগামী এসএসসি থেকে তুলে দেওয়া হবে এমসিকিউ প্রশ্নপত্র।
মঙ্গলবার বিকেলে সচিবালয়ে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে দুই ঘণ্টাব্যাপী অনুষ্ঠিত এক আন্তঃমন্ত্রণালয় সমন্বয় সভায় এসব সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। তবে শিগগিরই শিক্ষক, শিক্ষাবিদ, অভিভাবকসহ সবার সমন্বয়ে বড় একটি সেমিনার আয়োজন করে সিদ্ধান্তটি চূড়ান্ত করা হবে।
মঙ্গলবারের এ সভায় সরকারের তিনজন মন্ত্রী, ছয়জন সচিবসহ ১৮টি সরকারি দপ্তরের প্রধানরা অংশ নেন। শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদের সভাপতিত্বে সভায় অংশ নেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এবং ডাক ও টেলিযোগাযোগ, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তিমন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার।
সভা সূত্রে জানা গেছে, আগামী পরীক্ষা গ্রহণের পদ্ধতিই আমূল বদলে ফেলা হবে। পরীক্ষা গ্রহণ প্রক্রিয়ায় জড়িত লোকজনের সংখ্যা কমিয়ে ফেলতে পুরো পদ্ধতিকে ডিজিটালাইজ করা হবে। পাবলিক পরীক্ষায় আর আগামীতে প্রশ্নপত্র ছাপানো হবে না। ডিজিটাল ‘প্রশ্নব্যাংকে’র মাধ্যমে যন্ত্রের সাহায্যে পরীক্ষার দিন সকালে অটোমেটিক প্রশ্নপত্র তৈরি করা হবে।
পরীক্ষা শুরুর আগে কেন্দ্রের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের প্রশ্ন সেট ও পাসওয়ার্ড জানিয়ে দেওয়া হবে। পরীক্ষার হলে কেন্দ্র সচিবদের একটি করে ডিজিটাল ডিভাইস দেওয়া হবে। সকাল সাড়ে ৯টার পর তাতে পাসওয়ার্ড প্রবেশ করানো হলে প্রশ্নপত্র ভেসে উঠবে। তা দেখেই পরীক্ষার হলে দায়িত্বরত শিক্ষকরা বোর্ডে প্রশ্ন লিখে দেবেন।
পরীক্ষার কক্ষ বড় হলে প্রয়োজনে কক্ষজুড়ে একাধিক বোর্ড ব্যবহার করা হবে, যেন পেছনের পরীক্ষার্থীদের প্রশ্ন দেখতে কোনো সমস্যা না হয়। এভাবে পরীক্ষা নেওয়া হবে। প্রশ্নব্যাংকে সারাবছর শিক্ষকরা প্রশ্ন পাঠাতে পারবেন। হাজার হাজার প্রশ্ন এ ব্যাংকে জমা করা হবে। পরীক্ষার দিন তা থেকে নির্ধারিত ১০টি প্রশ্ন যন্ত্রের সাহায্যে বাছাই করে চূড়ান্ত করা হবে। কোন প্রশ্নটি চূড়ান্ত করা হলো, তা সকাল সাড়ে ৯টার আগে কেউ দেখতে পারবে না।
সংশ্নিষ্ট ডিভাইসে নির্ধারিত সময়ের পরে পাসওয়ার্ড ব্যবহার করেই কেবল কেন্দ্র সচিবরা প্রশ্ন জানতে পারবেন। এখনকার মতোই পরীক্ষার্থীদের আধঘণ্টা আগে কেন্দ্রে গিয়ে আসন গ্রহণ করতে হবে। এমসিকিউ প্রশ্নপত্র তুলে দেওয়া হবে। তবে নতুন পদ্ধতি কার্যকর করার আগে আগে পরীক্ষামূলকভাবে (পাইলটিং) ‘ডামি পরীক্ষা’ নেওয়া হবে।
সভা সূত্র জানায়, বর্তমান পরীক্ষা ব্যবস্থায় সব মিলিয়ে প্রায় ১০ হাজার শিক্ষক-কর্মচারী পরীক্ষা গ্রহণ প্রক্রিয়ায় জড়িত থাকেন। এত বিশালসংখ্যক মানুষের সম্পৃক্ততায় পাবলিক পরীক্ষা নিয়ে প্রশ্নপত্র ফাঁস রোধ করা সম্ভব নয়।
সভায় আরও আলোচনা হয়, এইচএসসি পরীক্ষা আগামী ২ এপ্রিল দেশজুড়ে শুরু হচ্ছে। এরই মধ্যে এ পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ছাপানো হয়ে গেছে। তাই নতুন পদ্ধতি এ পরীক্ষার ক্ষেত্রেও কার্যকর করা সম্ভব নয়। প্রশ্ন ফাঁস ঠেকাতে এই নতুন পদ্ধতি আগামী বছর এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষার ক্ষেত্রে কার্যকর করার নীতিগত সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
হাসান পিন্টু
‘ভারতে প্রতি চার সেকেন্ডে ১ জন আক্রান্ত’
ভয়াবহ কোভিড ঝড় বয়ে যাচ্ছে ভারতের ওপর দিয়ে। গত বুধবার......বিস্তারিত